(বাঁ দিকে) বিজেপি নেতারা ফেসবুকে এই পোস্ট করছেন। সিপিএমের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে এই পোস্ট ঘুরছে (ডান দিকে)।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজে’র অরাজনৈতিক ব্যানারে আগামী ২৭ অগস্ট হবে ‘নবান্ন অভিযান’। সেখানে থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কর্মসূচির রাশও বিজেপির ছাত্র-যুব সংগঠনের হাতেই থাকছে। আর সে জন্যই ওই কর্মসূচি এড়াচ্ছে বাম-সহ অন্য ছাত্র সংগঠনগুলি।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের পরে প্রতিবাদের সুর যখন চড়ছে, তখন থেকেই শুভেন্দু চাইছিলেন সম্মিলিত ভাবে ‘নবান্ন অভিযান’ হোক। নিহত নির্যাতিতার বাবা সেই ডাক দিলে তাঁরা বাকিটা বুঝে নেবেন, এমন মন্তব্যও করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। তার পরপরই এই কর্মসূচির ঘোষণা হয়। কর্মসূচি সফল করতে সমাজমাধ্যমে প্রচার শুরু করেছেন শুভেন্দুর নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি নেতা-কর্মীরা। দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি অন্য দলের সমর্থকদের টানার চেষ্টাও চলছে।
বিজেপিতে যাওয়ার পরে তৃণমূলকে হটাতে বারবার ‘ভাল সিপিএমে’র সমর্থন চেয়েছেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামে তাঁর জয়ের পিছনে যে বাম ভোট ছিল, তা-ও বলেছেন। একটা সময় রাম-বাম অলিখিত জোট নিয়ে কম চর্চা হয়নি। তবে এ বারের নবান্ন অভিযান নিয়ে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক জাকির হোসেন স্পষ্টই বলেন, ‘‘ছদ্মনামের ওই সংগঠনের পিছনে বিজেপির লোকজন রয়েছে। তা ছাড়া, ওই দিন ইউজিসি-র নেট রয়েছে। তা-ও কী করে কর্মসূচি নেওয়া হল, সেটাই প্রশ্ন।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে ছাত্র ফ্রন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘ছাত্র সমাজের বকলমে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।’’
দলের কোনও সংগঠনেরই ২৭ তারিখের কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার প্রশ্ন নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সিপিএমের তরফে। এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়ের বক্তব্য, ‘‘হাথরস, উন্নাও, দিল্লিতে কুস্তিগিরদের সঙ্গে ব্রিজভূষণের দুর্ব্যবহারে যুক্ত বিজেপির মুখে ধর্ষণের প্রতিবাদ মানায় না। আমরা নিশ্চিত, ছাত্রেরা ৩ সেপ্টেম্বর আমাদের কর্মসূচিতেই যাবেন।’’ গেরুয়া ছাত্র সংগঠন এবিভিপির কাঁথি নগর মণ্ডলের সম্পাদক অবিনাশ দাসের অবশ্য দাবি, ‘‘নির্মম ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সব রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলি আমাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। পতাকা ছাড়াই ছাত্র-যুবরা নবান্ন অভিযানে শামিল হবেন।’’
২৮ অগস্ট আবার তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবস। সে দিন কলকাতায় সমাবেশে প্রধান বক্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টিএমসিপি-র উদ্যোগে সে দিনের জমায়েতের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। পিঠোপিঠি কর্মসূচিতে যাতে অপ্রীতির কিছু না ঘটে, তা নিয়েও সতর্ক শাসকদলের ছাত্র সংগঠন। টিএমসিপির কাঁথি জেলা সভাপতি শতদল বেরা বলেন, ‘‘ছাত্রসমাজ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে রয়েছে। ২৭ তারিখ গভীর রাত থেকেই আমাদের কর্মীরা দলনেত্রীর বক্তব্য শুনতে কলকাতা যাবে।’’ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের মতে, ‘‘দলের পরিচয় গোপন করে বাম-রাম মিলে যে চক্রান্ত করছে, এ তো তারই প্রমাণ। এখন তদন্ত করছে সিবিআই। তাই দাবি জানাতে হলে সিবিআইয়ের অফিসে যান।’’