—ফাইল চিত্র।
‘অভয়া ক্লিনিকে’র পরে ‘অভয়া ক্লাস’। আর জি কর কাণ্ডে বিচার চেয়ে আন্দোলনরত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের পড়াশোনার বন্দোবস্ত চালু হয়েছে অবস্থান মঞ্চেই। রাজ্যের একাধিক জেলায় দেখা যাচ্ছে এই উদ্যোগ।
টানা কর্মবিরতি পালনের মধ্যেও ‘অভয়া ক্লিনিক’ খুলে ইতিমধ্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তার পাশাপাশি শনিবার থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে শুরু হল ‘অভয়া ক্লাস’। ‘ট্রমা কেয়ার ইউনিটের’ সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ মঞ্চেই চতুর্থ বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিলেন ‘সিনিয়র রেসিডেন্ট’রা (স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ চিকিৎসক)। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায়-দফায় ক্লাস চলে।
দিন কয়েক আগেই মেদিনীপুর মেডিক্যালেও শুরু হয়েছে অভয়া পাঠশালা। রোজ সন্ধ্যায় ক্লাস নেওয়া হচ্ছে অবস্থান মঞ্চেই। সেখানেই জুনিয়র ডাক্তারদের ক্লাস নিচ্ছেন সিনিয়র শিক্ষক-চিকিৎসকেরা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের এক জুনিয়র ডাক্তার বলছেন, ‘‘অভয়া পাঠশালা ভাল ভাবেই চলছে। আমরা বেশ কয়েকটি ক্লাস করেছি।’’ অবস্থান মঞ্চে সকালে হচ্ছে অভয়া ক্লিনিক, রাতে সেখানেই চলছে পড়াশোনা।
নির্দিষ্ট ক্লাসরুমের বদলে অবস্থান-বিক্ষোভ মঞ্চে ক্লাস কেন? মালদহ মেডিক্যালের ক্ষেত্রে জানা গিয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে হাউস স্টাফদের পাশাপাশি শামিল হয়েছেন স্নাতকোত্তরের ছাত্রছাত্রী (এমডি) এবং ‘সিনিয়র রেসিডেন্ট’রা। তবে, ‘সিনিয়র রেসিডেন্ট’ এবং স্নাতকোত্তরের ছাত্রছাত্রীরা জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন। ফলে, বহির্বিভাগ, অন্তর্বিভাগের পরিষেবা দিতে হচ্ছে মেডিক্যালের সিনিয়র চিকিৎসকদের। এর প্রভাব পড়েছে ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায়। ‘সিনিয়র রেসিডেন্ট’রা ছাত্রছাত্রীদের ওয়ার্ডে নিয়ে গিয়ে হাতে-কলমে পাঠ দেন। এমনকি, ডাক্তারি পড়ুয়াদের ক্লাসও নেন তাঁরা।
এ দিন থেকে মালদহ মেডিক্যালে চতুর্থ বর্ষ অর্থাৎ চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ক্লাস চালু হয়েছে। ‘সিনিয়র রেসিডেন্ট’ চিকিৎসক সাত্তার হোসেন বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় যাতে কোনও খামতি না থাকে, সে জন্য আন্দোলনের মধ্যেও অভয়া ক্লাসে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হচ্ছে। ভাল সাড়াও মিলেছে।’’ চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কৌশিক ঘোষের কথায়, ‘‘সিনিয়রেরা আমাদের পড়াশোনায় সব সময়েই সহযোগিতা করেন। এখন অভয়া ক্লাসে পড়ানো হচ্ছে। তাতে আমাদের সুবিধা হচ্ছে।’’
তবে প্রতিবাদ আন্দোলন চললেও মেডিক্যাল কলেজে নিয়ম অনুযায়ী ক্লাস হচ্ছে বলে দাবি মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষক-চিকিৎসকেরা রুটিন অনুযায়ী প্রথম থেকে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছেন। পড়াশোনায় কোনও প্রভাব পড়েনি।’’