প্রতীকী ছবি।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতে ২০ দিন বাকি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের যা দাপট, তাতে সেই সূচি মেনে মাধ্যমিক শুরু হবে কি না, সেই বিষয়ে রাজ্য সরকার কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি। বিভিন্ন স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা চিন্তায় আছেন। তাঁরা দ্রুত সিদ্ধান্তের কথা জানতে চাইছেন।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কিছু দিন আগে জানিয়েছিল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়েই শুরু হবে। তবে এ বার ওই পরীক্ষা হবে হোম সেন্টারে অর্থাৎ পড়ুয়াদের নিজের নিজের স্কুলে। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিছু দিন আগে বলেছিলেন, “পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।”
অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, আর কত দিন পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হবে? এখনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে না কেন? তাঁরা জানতে পেরেছিলেন, ২ মে ভোটের ফল ঘোষণার পরে মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানাবে সরকার। ভোটের ফল বেরিয়ে ১০ মে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হয়ে গেল। নতুন শিক্ষামন্ত্রীর নাম ঘোষণা হয়ে গেল। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ে এখনও কিছু জানানো হল না কেন, সেই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে।
নতুন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোমবার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে।” অভিভাবকদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব তা জানিয়ে দেওয়া হোক। কারণ, লোকাল ট্রেন চলছে না। সরকারি বাস চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম।
বেসরকারি বাসের সংখ্যাও অনেক কমে গিয়েছে। গণপরিবহণে ভিড় হচ্ছে বেশি। এই অবস্থায় গণপরিবহণে করে ছাত্রছাত্রীরা কী ভাবে পরীক্ষা দিতে যাবে, সেই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকেরা। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, অতিমারিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে পড়ুয়াদের বসার ব্যবস্থাই বা কী রকম হবে? অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে এতটাই দুর্ভাবনায় আছে যে, তারা পড়াশোনায় মন বসাতে পারছে না।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না-জানালেও আইসিএসই দশম এবং সিবিএসই দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা বেশ কিছু দিন আগে ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি ওই দুই বোর্ডের অধীন অনেক স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে অনলাইনে ক্লাসও শুরু হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষা বাতিলের ফলে কী ভাবে দশম শ্রেণির মূল্যায়ন হবে, তা-ও জানিয়ে দিয়েছে বোর্ড।
নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। পরীক্ষা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তের কথা জানানো উচিত।”