ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ স্কুল। তার জেরে ছাত্রছাত্রীদের একাংশের মধ্যে স্কুলছুটের প্রবণতা বাড়ছে। এই অবস্থায় তাদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে এগিয়ে এসেছেন বিশ্বভারতীর কয়েক জন পড়ুয়া। তাঁরা নিখরচায় অভাবি পরিবারের প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ানো শুরু করেছেন। এই উদ্যোগের নাম রেখেছেন ‘চলমান পাঠশালা’।
হীরক গঙ্গোপাধ্যায়, অভিষেক কুমার, মেঘনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়ন্তন সিংহ, শেখ সাবির আলিরা জানালেন, প্রায় দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়ারা। তাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ কমতে শুরু করেছে। সমস্যা বেশি প্রকট দুঃস্থ পরিবারে। এই অবস্থায় হীরকেরা বৃহস্পতিবার থেকে দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে শিক্ষাদানের কাজ শুরু করেছেন। এ দিন তাঁরা শান্তিনিকেতন লাগোয়া দিগন্তপল্লি এলাকার শিক্ষাদানের কাজ শুরু করেন। এলাকার কালীমন্দির প্রাঙ্গণে ছেলেমেয়েদের গ্রুপে ভাগ করে তাঁরা পড়ানো শুরু করেছেন। সব বাচ্চার মুখে ছিল মাস্ক। ঢাকা ছিল মাথাও। প্রতিদিনই তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে অল্পসংখ্যক ছেলেমেয়েকে নিয়ে করোনা বিধি মেনে এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন সায়ন্তন, অভিষেকেরা। এই কাজে তাঁদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে চলেছে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ।
মেঘনা, সাবিরেরা বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে এত দিন স্কুল বন্ধ থাকায় অধিকাংশ বাচ্চারই পড়াশোনার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বইয়ের প্রতি আগ্রহ কমেছে। যার ফলে ওই বাচ্চাদের স্কুলছুট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই ওদের বইমুখো করে তুলতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’’ তাঁদের এই উদ্যোগে খুশি ছোট ছেলেমেয়েদের অভিভাবকেরাও। দিগন্তপল্লির বাসিন্দা লক্ষ্মী দাস, হরিদাসী বাগদি, সুপর্ণা বাগদিরা বলছেন, “দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা ভেবে পাচ্ছিলাম না কী ভাবে তাদের পড়ানোর প্রতি আগ্রহ ফেরাব, কে ওদের পড়াবে। বিশ্বভারতীর ওই ছাত্রছাত্রীরা এই ভাবে এগিয়ে আসায় আমাদের খুব উপকার হয়েছে। আমরা ওঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”