খুনের প্রতিবাদে স্বরূপগঞ্জে খেয়া, বাস বন্ধ

গত শুক্রবার থেকে এখানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। বিজেপি ও তৃণমূলের টানাপোড়েনে স্থানীয় রাজনাতির মহল তোলপাড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল বিজেপি। তার মধ্যে অভিযুক্তেরা গ্রেফতার না-হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই রবিবার স্বরূপগঞ্জ এলাকায় পালিত হল বনধ। বন্ধ থাকল খেয়া পারাপার। চলল না বাস। চরম হয়রানির শিকার হতে হল স্থানীয় মানুষকে।

Advertisement

গত শুক্রবার থেকে এখানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। বিজেপি ও তৃণমূলের টানাপোড়েনে স্থানীয় রাজনাতির মহল তোলপাড়। বিজেপির দাবি, ‘জয় শ্রীরাম’ বলাতেই গত শুক্রবার খুন করা হয়েছেন কৃষ্ণ দেবনাথ নামে এক যুবক। কিন্তু পুলিশ বলছে, মদের ঠেকে গন্ডগোলের জেরেই এই খুন। বৃহস্পতিবার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান কৃষ্ণ। শনিবার তার দেহ স্বরূপগঞ্জ পৌঁছতেই কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ ঘাট অবরোধ করে বিজেপি। ঘাটে মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু হয়। নদী পার হয়ে নবদ্বীপ শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরা হয় মৃতদেহ নিয়ে। থানার সমনেও সেই মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সাংসদ ও জেলা নেতাদের পাশাপাশি সেখানে হাজির হন মুকুল রায়। সেখানেই পুলিশ প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টা সময় দিয়েছিলেন বিজেপির নেতারা। এই ২৪ ঘণ্টায় তাঁরা কোনও বড় আন্দোলনে যাবেন না বলে জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও বনধ পালন সম্পর্কে বিজেপি নেতাদের দাবি, তাঁরা এই বনধে জড়িত নন। খুনের প্রতিবাদে এলাকার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বনধ পালন করেছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বাস মালিক সমিতি, প্রত্যেকেরই বক্তব্য, বিজেপি বনধ ডেকেছে বলেই তাঁরা সব বন্ধ রেখেছেন। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির পক্ষে অসীম দত্ত বলেন, “এলাকায় উত্তেজনা আছে। আমরা ঝুঁকি নিতে রাজি নই। বিজেপি বনধ ডাকায় আমাদের কর্মীরাও বাস চালাতে রাজি ছিলেন না।” এত দিন তৃণমূল বনধ ডাকলে তৃণমূল প্রভাবিত এই খেয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ খেয়া পারাপার বন্ধ করে দিতেন। এ দিন দেখা গেল পুরোপুরি উল্টো চিত্র। রবিবার সকাল থেকে সেই কর্তৃপক্ষই স্বরূপগঞ্জ-নবদ্বীপ খেয়া চলাচল বন্ধ রাখলেন।

Advertisement

এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ পরাপার করেন। নবদ্বীপের মানুষ ছাড়াও বর্ধমানের মানুষেরা এই পথ ব্যবহার করেন। তাঁদের অনেকটা ঘুরে গৌরাঙ্গ সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা সাংসদ মহাদেব সরকার বলছেন, “আমরা কিন্তু বনধ ডাকিনি। আসলে চোখের সামনে এত বড় অন্যায় দেখে স্থানীয় মানুষই এগিয়ে এসে বনধে শামিল হয়েছেন।” নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের হরিদাস প্রামাণিকের অবশ্য দাবি, “বিজেপি-ই আসলে ভয় দেখিয়ে সকলকে বনধ পালন করতে বাধ্য করেছে। আমরা কোনও অশান্তি চাইনি বলে বিরোধিতা করিনি।”

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement