লকডাউন ও বৃষ্টিতে শুনশান শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়। ছবি: পিটিিআই
লকডাউনের কড়াকড়ির মধ্যে বৃহস্পতিবার কলকাতার বাগবাজারে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। পুলিশ আটকালে তিনি জানান, চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ সেই চিকিৎসকের নম্বরে ফোন করে জানতে পারে, ওই ব্যক্তি মিথ্যে বলছেন। এর পরেই লকডাউন-বিধি ভাঙার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। টানা দু’দিন সাপ্তাহিক লকডাউনের প্রথম দিনে এমন ‘চোর-পুলিশ’ খেলা চলেছে শহর কলকাতার অনেক এলাকায়।
শুধু কলকাতা নয়, ‘চোর-পুলিশ’ খেলা দেখা গিয়েছে বিভিন্ন জেলাতেও। হুগলির পান্ডুয়ায় মোরগ লড়াইয়ের আসর বসেছিল। পুলিশ যেতেই আসর ফেলে চম্পট দেয় খেলুড়েরা। জলপাইগুড়ির ইন্দিরা গাঁধী কলোনিতে করলা নদীর ধারে চলছিল মাছ ধরা। পুলিশ যেতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালান মাছ ধরতে জড়ো হওয়া যুবকেরা।
প্রশাসন জানিয়েছে, কলকাতায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টা পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৫৬ জনকে। ধরা হয়েছে ২৭টি গাড়ি। শিলিগুড়িতে ধৃতের সংখ্যা একশোর বেশি। পশ্চিম মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমান, মালদহ, দুই দিনাজপুরেও কয়েক জনকে ধরা হয়। আবার পুলিশের বিরুদ্ধে স্টক এক্সচেঞ্জের গাড়ি আটকানোর অভিযোগও উঠেছে। তবে তা নিয়ে লালবাজার কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
পুরুলিয়া শহর, ঝালদা বা পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের মতো কিছু জায়গায় সকালে কিছু দোকান-বাজার খুলতে দেখা যায়। কাটোয়া থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর— নানা এলাকায় আড্ডা জমানোর দৃশ্য দেখা যায়। তবে বৃষ্টির দৌলতে সেই সব স্থায়ী হয়নি। তবে অন্য লকডাউনের দিনের তুলনায় এ দিন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে রোগীর আনাগোনা বেশি ছিল।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি-লকডাউনের যুগলবন্দিতে বন্ধের চেহারা রাজ্যে, কলকাতায় গ্রেফতার ৫৪১
লকডাউন উপেক্ষা করেই এ দিন পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের কর্মিসভা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের বারাবনি ব্লক কমিটির উদ্যোগে এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ বারাবনি পঞ্চায়েতের জয়রামডাঙা গ্রামে সভা হয়। উপস্থিত ছিলেন বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, ব্লক সভাপতি অসিত সিংহ। অভিযোগ, বেশির ভাগ কর্মী মাস্ক পরেননি। পারস্পরিক দূরত্ব তো দূরে থাক, একেবারে গা ঘেঁষাঘেষি করে বসেছিলেন। তবে বিধানবাবুর দাবি, ‘‘সরকারের নির্দেশমতো দূরত্ব ও স্বাস্থ্য-বিধি মেনে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।’’ ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘ওঁরা শাসক দলের বলেই নিজেদের সরকারের তৈরি করা নিয়ম-নীতি মানছেন না।’’
আরও পড়ুন: ‘রাজনীতির কাদামাখা কুস্তির আখড়ায় পরিণত হয়েছে শান্তিনিকেতন’, খোলা আবেদনে বিশিষ্টজনেরা
পরপর দু’দিন লকডাউনে খুশি নন কুমারটুলির মৃৎশিল্পীরা। শনিবার গণেশ চতুর্থী। তার আগে লকডাউনে ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে বলে দাবি তাঁদের। যদিও রাতের দিকে গণেশ চতুর্থীর বাজার করতে ভিড় দেখা গিয়েছে শহরের বেশ কিছু বাজারে।