(বাঁ দিকে) শান্তনু সেন এবং সুদীপ্ত রায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের সময় ‘বিদ্রোহী’ হয়ে উঠেছিলেন। পড়তে হয়েছিল দলের একাংশের রোষানলে। ফের এক বার আলোচনায় তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন। এ বার রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের তাঁর সদস্যপদ খারিজের আবেদন জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবনকে চিঠি দিলেন সংস্থার সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়। দাবি, কাউন্সিলের বৈঠকে পর পর ছ’বার উপস্থিত হননি শান্তনু! তাই তাঁর কাউন্সিলের সদস্যপদ খারিজ করা হোক। শুধু তা-ই নয়, শান্তনুর জায়গায় নতুন কারওকে মনোনীত করার অনুরোধও জানানো হয়েছে চিঠিতে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে পাঠানো চিঠিতে সুদীপ্ত ছ’টি তারিখ উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবি করেন, উল্লিখিত তারিখে কাউন্সিলের যে বৈঠক হয়েছে, তাতে গরহাজির ছিলেন শান্তনু। সুদীপ্ত চিঠিতে কাউন্সিলের নিয়ম উল্লেখ করে জানান, যদি কোনও সদস্য পর পর তিনটি বৈঠকে উপস্থিত না হন, তবে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হবে। এ ক্ষেত্রে শান্তনুর সদস্যপদ বাতিলের আর্জি জানিয়েছেন সুদীপ্ত। আরজি কর আবহে তৃণমূলের দুই চিকিৎসক গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব যে এখনও চরমে, এই ঘটনায় তা আরও এক বার প্রমাণিত হল বলে মনে করছেন অনেকে।
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল-সহ একাধিক বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন শান্তনু। খোয়ান তৃণমূলের মুখপাত্রের পদ। তার পর থেকেই দলের অন্দরে তিনি ‘কোণঠাসা’ বলে দাবি বিভিন্ন সূত্রে। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা পদ থেকেও অপসারণ করা হয়েছে তাঁকে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতর রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের যে অ্যাড-হক কমিটি গড়েছে, তাতেও নেই শান্তনু। সেই আবহেই বেজে যায় রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনের দামামা। প্রথমে শান্তনুকে বলতে শোনা যায়, তিনি এ বারের নির্বাচনে লড়বেন না। যদিও পরে সিদ্ধান্ত বদল করেন। জানান, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক পদে লড়বেন। সেই মতো মনোনয়নও জমা দেন শান্তনু।
অন্য দিকে, কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তীকে অপসারণের নির্দেশ দিয়ে সুদীপ্তকে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। রেজিস্ট্রার পদে তাঁর পুনর্বহালে সরকারের অনুমোদন নেই। তাই অবিলম্বে তাঁকে সরিয়ে নতুন কারওকে সেই পদে বহালের কথা বলা হয়েছে। রেজিস্ট্রার পদে মানসের নিয়োগ ‘অবৈধ’ এমন দাবি তুলেছিল ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস’। স্বাস্থ্যসচিবের এই চিঠিকে ‘নৈতিক জয়’ বলে মনে করছে তারা।