রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজোর আগেই শুনানি শেষ হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বুধবার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলার রায় ঘোষণা করবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু একা পার্থ নয়, এসএসসি নিয়োগ ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত আরও আট জনের জামিন মামলারও রায় ঘোষণা হবে একই সঙ্গে। তবে পার্থেরা যদি সিবিআই মামলায় জামিন পান হাই কোর্টে, তবুও এখনই জেলমুক্তি হবে না।
জামিন চেয়ে এর আগে একাধিক বার হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পার্থ। হাই কোর্টের সিঙ্গল এবং ডিভিশন বেঞ্চে খারিজ হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আবেদন। এর আগে ইডির মামলায় জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ। সেই জামিনের বিরোধিতা করে ইডি। গত এপ্রিলের ওই শুনানি শেষে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ পার্থের জামিনের আবেদন খারিজ করেন। পরে সিবিআইয়ের মামলায় জামিন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ-সহ ন’জন। প্রায় ছ’মাস ধরে ওই জামিন মামলাগুলির শুনানি চলে হাই কোর্টে।
২০২২ সালের ২৩ জুলাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার আগে তাঁর নাকতলার বাড়িতে চলেছিল দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। একই সময়ে পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও হানা দিয়েছিল ইডি। তল্লাশিতে টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। পরে অর্পিতার আরও একটি ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ উদ্ধার হয়। মোট উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৪৯ কোটি ৮০ লাখ। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। ইডির পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইও অভিযোগ আনে। দুই মামলাই এখনও বিচারাধীন।
পার্থ ছাড়াও শিক্ষা দফতরের চার জনকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই তালিকায় রয়েছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা। পাশাপাশি, টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কাজে এজেন্ট বা মিডলম্যান হিসাবে কাজ করেছিলেন চার জন। জামিন মামলায় রায়ের অপেক্ষায় তাঁরাও।
বুধবার দুপুর ১টায় পার্থদের জামিন মামলায় রায় দেবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে হাই কোর্ট যদি সিবিআই মামলায় পার্থের জামিন মঞ্জুরও করে, তা হলেও এখনই জেলমুক্তি হচ্ছে না। কারণ, ইডির মামলা ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবারই শীর্ষ আদালতে পার্থের জামিন মামলার শুনানি রয়েছে। অন্য দিকে, দিন কয়েক আগেই প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই মামলায় জামিন চেয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আবেদন করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। নিম্ন আদালতে সেই মামলারও শুনানি চলছে।