প্রতীকী ছবি।
সদ্য কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে তাদের ভোট বেড়েছে। ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে বিজেপিকে টপকে দ্বিতীয় স্থানেও এসেছে বামেরা। এর পরে রাজ্যের অন্যত্র পুরভোটে বাড়তি উদ্যমে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু করোনা-আবহে হচ্ছে তার উল্টোটাই। চারটি পুর-নিগমের ভোটের প্রচারে মাঝারি মাপের কর্মসূচিও বাতিল করে দিচ্ছেন রাজ্যের বাম নেতৃত্ব।
কলকাতায় এ বার পুরভোটের প্রচারে বড় কোনও কর্মসূচি ছিল না বামেদের। জোর দেওয়া হয়েছিল ওয়ার্ডভিত্তিক প্রচার এবং বাড়ি বাড়ি যাওয়ার উপরেই। শহরের কিছু এলাকা ধরে কয়েকটি ওয়ার্ড মিলিয়ে কয়েকটি পদযাত্রা বা অল্প কিছু সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের রাজ্য নেতাদের একাংশ। বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোল ও চন্দননগর পুর-নিগমের ক্ষেত্রেও বামেদের কৌশল একই। চার শহরেই হাতে-গোনা কয়েকটি কর্মসূচিতে সিপিএমের রাজ্য স্তরের নেতাদের কয়েক জন উপস্থিত থাকবেন বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা-ও বাতিল করা হচ্ছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘এই রকম পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা আদৌ উচিত কি না, আমরা সেই প্রশ্ন তুলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে একাধিক চিঠি দিয়েছি। সর্বদল বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কমিশন কোনও কর্ণপাত করেনি। আদালতে কী হবে, সেটা পরের ব্যাপার। পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, তা মাথায় রেখে আমরা আর কোথাও তেমন কোনও প্রচার কর্মসূচিতে যাচ্ছি না।’’
প্রার্থীদের নিয়ে কোভিড-বিধি মেনে এলাকায় যতটুকু প্রচার করা সম্ভব, তা-ই করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা নেতৃত্বকে বার্তা পাঠিয়েছে আলিমুদ্দিন। তার সঙ্গেই শুরু করা হচ্ছে ই-পথসভা। যেখানে কয়েকটি ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বক্তাদের নিয়ে প্রচার-সভা শ্রোতা বা দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে ফেসবুক লিঙ্ক বা সিপিএমের ইউটিউব চ্যানেল মারফত।
পরিস্থিতির বিচারে সিপিএম ভোট-কৌশলের প্রশ্নে কিছু সিদ্ধান্ত নিলেও কংগ্রেসের অন্দরে অবশ্য কোনও স্পষ্টতা নেই। কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার জন্য প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতোকে চেয়ারম্যান করে পর্যবেক্ষক কমিটি গড়ে দিয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস। কলকাতার জন্যই প্রচার কমিটি হয়েছিল মালদহ জেলার প্রাক্তন বিধায়ক মুস্তাক আলমকে মাথায় রেখে। কিন্তু অন্য জায়গার নির্বাচনের জন্য কারা কী সিদ্ধান্ত নেবে, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের কাছে নেই! কমিশন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, শিলিগুড়ির ৪৭টির মধ্যে ৩৩, বিধাননগরের ৪১টির মধ্যে ২৬, চন্দননগরের ৩৩টির মধ্যে ১৯ এবং আসানসোলের ১০৬টির মধ্যে ৫২টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘জেলা নেতৃত্বই তাঁদের মতো করে যেখানে যা করার, করছেন। প্রদেশ স্তরে আর কোনও আলোচনা হয়নি।’’