—প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম লেখানো রোগী যে-কোনও হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে গেলেই যাতে চিকিৎসা পান, তা নিশ্চিত করতে নিয়মবিধির আঁটুনি আরও মজবুত করছে রাজ্য সরকার। সেই জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের তালিকায় থাকা বা না-থাকাটা আর হাসপাতাল ও নার্সিংহোম-কর্তৃপক্ষের ইচ্ছানির্ভর থাকছে না।
বঙ্গের সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমকেই এ বার ওই প্রকল্পের অধীন রোগীকে ভর্তি নিতে হবে বলে মঙ্গলবার নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোম যদি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীন কোনও রোগীকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট লাইসেন্স বাতিল করা হবে অথবা লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করবে না রাজ্য।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর জারি করা নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রাজ্যের সব বাসিন্দার চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করেছে সরকার। তাই ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট অ্যান্ড রুল-২০১৭’-এর ধারা ৭, উপধারা ৩ (ডব্লিউ) অনুযায়ী কেন্দ্র ও রাজ্যের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রকল্পে সব হাসপাতাল, নার্সিংহোমকে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করতেই হবে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্যের যে-সব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ইন্ডোরে অন্তত ১০টি বা তার বেশি শয্যা রয়েছে, শুধু তারাই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অর্ন্তভুক্ত হবে।
রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু হওয়ার পরে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সরকারি চিকিৎসার দর পরিমার্জন করতে আর্জি জানিয়েছিলেন সরকারের কাছে। তা নিয়ে কমিটিও গড়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েক বার বৈঠকও করেন রাজ্য প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। তার পরে একটি পরিমার্জিত দরও তৈরি করা হয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করার সময়েও মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের উপরে বিশেষ জোর দিয়েছিলেন। তার পরেও রাজ্যের বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের রোগী প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতেই লাগাম টানতে স্বাস্থ্য দফতর এ-হেন ‘কড়া’ পদক্ষেপ করল বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘শয্যা থাকলে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কোনও রোগীকেই প্রত্যাখ্যান করা হয় না। তবে শয্যা না-থাকলে সংশ্লিষ্ট রোগীর তথ্য নথিভুক্ত করে রাখা হয়। শয্যা ফাঁকা হলেই খবর পাঠানো হয় তাঁর কাছে। আমাদের সংগঠনের সব হাসপাতালই সরকারের প্রকল্পের আওতায় আছে।’’