মকর সংক্রান্তিতে বাড়িতে বসেই দেখা যাবে কপিলমুনির আশ্রমের পুজো। ফাইল চিত্র।
সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার! কিন্তু এ বার গঙ্গাসাগর না গিয়েই বাড়িতে বসেই পুণ্যস্নান করার পাশাপাশি কপিলমুনির মন্দিরে মকর সংক্রান্তির দিন পুজো দিতে পারবেন ইচ্ছুক ব্যক্তিরা। ঘরে বসে গঙ্গাসাগরের জলেই পুন্যস্নানের সুবিধা গত বছর থেকেই দিতে শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। এ বার আরও কয়েক কদম এগিয়ে ঘরে বসে কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দেওয়া থেকে শুরু করে পুজো দেখার সুযোগ করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের ভাষায় এই বন্দোবস্তকে 'ই-পুজো' নাম দেওয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে মাথায় রেখে অতিরিক্ত সমাগম এবং ভিড় এড়াতে গত বার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। যাঁরা গঙ্গাসাগরে আসতে পারবেন না, তাঁরা যাতে বাড়ি থেকেই পুজো দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এ বার ই-পুজোর নামে মেলাকে বিশ্ব মানচিত্রে তুলে আনার প্রয়াস করা হচ্ছে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, ই-পুজোকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত, যে কোনও ব্যক্তি বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে বসে সরকারি পোর্টালে নিজের নাম, গোত্র, কোন সময় পুজো দিতে চান, সেই সব তথ্য দিয়ে পুজোর ‘স্লট’ বুক করতে পারবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘স্লট’ ধরে ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পুজো দেখার লিঙ্ক পাঠানো হবে। সেই লিঙ্কে ঢুকলেই কপিলমুনির মন্দিরের অন্দরের পুজো দেখতে পাওয়া যাবে। এতে মন্ত্রপাঠ, আরতি সবই দেখার সুযোগ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ‘স্লট’ বুকিং করা ব্যক্তিদের পুজো দেখানোর পাশাপাশি, মন্দির প্রাঙ্গণ, সমুদ্র ও আশপাশের এলাকাও দেখানো হবে। দ্বিতীয়ত, পুজো হয়ে গেলে প্রসাদ ও প্রসাদী ফুল প্যাকেটবন্দি করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ‘স্লট’ বুকিং করা ব্যক্তির ঠিকানায়। প্রশাসনের এক কর্তা আবার বলছেন, ‘‘সরকারের এই উদ্যোগকে 'দুয়ারে প্রসাদ' বলাই যায়।’’
যেহেতু দেশজুড়ে কোভিডের টিকাকরণ গতি পেয়েছে। তাই ২০২১ সালের গঙ্গাসাগর মেলায় যা ভিড় হয়েছিল, এ বার তার তুলনায় জনসমাগম আরও বেশি হবে, বলেই মনে করছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। সাগরদ্বীপে এসে যদি কেউ যদি ভিড়ে ঢুকতে না চান, তাঁদের জন্যও ই-পুজোর ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। গত বছর থেকেই পুণ্যস্নানের জল (ই-স্নান) পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। আর এ বারের সংযোজনে ঘরে বসেই কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দেখার সুযোগ।