রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভাষণের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সেই বাজেট অধিবেশন। ফাইল চিত্র।
জমি লিজের মালিকানা স্বত্ব দিতে ভূমি সংস্কার আইনে সংশোধনী আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভাষণের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সেই বাজেট অধিবেশন। ১০ ফেব্রুয়ারি পেশ হতে পারে বাজেট। এর পরবর্তী সময়ে বাজেট সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হলেও তার পর বেশ কিছু বিল আনার পক্ষপাতী রাজ্য সরকার। সেই মর্মে ভূমি সংস্কারের এই সংশোধনী বিলটি আনা হতে পারে বলে পরিষদীয় দফতর সূত্রে খবর। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্যান্য দফতরের অধীনে লিজে থাকা জমির মালিকানাস্বত্ব দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা। সরকারি সম্মতির পর তা আইনে পরিবর্তিত হওয়া জরুরি। তা হলে বিষয়টি প্রয়োগ করা যাবে। তাই আগামী বাজেট অধিবেশনেই ১৯৫৫ সালের ভূমিসংস্কার আইনে সংশোধনী আনতে চলেছে সরকার। বিধানসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই আইনে সংশোধনী যুক্ত করা হয়েছে। তবে জমি লিজ সংক্রান্ত যে আইন আছে, স্বাধীনতার পর এই প্রথম তাতে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এই সংশোধনী আনা হলে বহুমুখী সুফল পাবে রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে রাজ্যের মানুষ। এমনটাই মত প্রশাসনিক কর্তাদের।
১৯৫৫ সালের ভূমিসংস্কার আইনের ভিত্তিতে ১৯৬৫ সালে নতুন এই আইনটি তৈরি হয়েছিল। প্রয়োজনে অতীতে একাধিক বার এই আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু এই প্রথম বার পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিধানসভায় বিল এনে ১৯৫৫ সালের আইনে সংশোধনীর মাধ্যমে লিজে দেওয়া জমির মালিকানা স্বত্ব দেওয়ার বন্দোবস্ত করবে। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, এই ভূমি সংস্কার আইন সংশোধন হলে লাভবান হবে শিল্প মহল। ফলে রাজ্যে যেমন শিল্প সম্ভাবনা বাড়বে, তেমনই বাড়বে রাজ্য সরকারের আয়। কারণ একটি প্রকল্প করতে গেলে জমির জন্যই খরচ হয় প্রায় ৩০ শতাংশ টাকা। ফলে জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই বিনিয়োগ করতে গিয়ে একটা খটকা থেকেই যায়। নতুন সংশোধনী আইন কার্যকর হলে সেই আশঙ্কাও থাকবে না। তবে ২০০২ সালে জমি বণ্টন এবং লিজ দেওয়া নিয়ে একটি নির্দিষ্ট নীতি নিয়ে এসেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। সেই সময় নীতির আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছিল ভূমি প্রদান নীতি। সেই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকার। কিন্তু ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সেই নীতিতে বেশ কিছু রদবদল করে। কিন্তু তাতে ফল মেলেনি বলেই মত প্রশাসনিক কর্তাদের। তাই ভূমি সংস্কার আইনে সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হচ্ছে। আপাতত বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার অপেক্ষায় ভূমি দফতর।