নবান্ন। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সন্ধানী (সার্চ) কমিটির গঠনে বদলের জন্য অর্ডিন্যান্স আনতে চলেছে রাজ্য। ওই কমিটিতে তিন জনের বদলে পাঁচ জন সদস্য রাখার কথা আগেই ঠিক হয়েছিল। ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ইউজিসির প্রতিনিধিকেও। সরকারি সূত্রে জানানো হচ্ছে, ইউজিসির প্রতিনিধি ছাড়াও ওই কমিটিতে রাজ্যপালের প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বা কোর্টের প্রতিনিধি, উচ্চ শিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি এবং রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি থাকবেন। প্রসঙ্গত, উচ্চ শিক্ষা দফতর ২০১৪ সালে উপাচার্য বাছাইয়ের সার্চ কমিটিতে ইউজিসি-র প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু ইউজিসি-র ২০১৮ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী, উপাচার্য বাছাই করার কমিটিতে ইউজিসি-র প্রতিনিধি থাকা বাধ্যতামূলক।
কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গত মাসে উপাচার্য নিয়োগের মামলার রায়ে জানিয়েছে, ইউজিসি-র বিধি অগ্রাহ্য করে উপাচার্য হিসাবে যাঁদের নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ করা হয়েছে বা কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এবং যাঁরা উপযুক্ত যোগ্যতামানেরই নন, তাঁরা উপাচার্য থাকতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ২০১৮ সালের গাইডলাইন অনুযায়ী, উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে ইউজিসি-র প্রতিনিধি থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি উপাচার্য হতে গেলে উচ্চ শিক্ষায় দশ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা চাই। উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যপাল তথা আচার্যের সম্মতিও বাধ্যতামূলক।
ঘটনাচক্রে, ওই রায়ের আগেই উপাচার্যদের পদত্যাগ করিয়ে তিন মাসের জন্য তাঁদের কাজ চালানোর দায়িত্ব দেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এই তিন মাসের মধ্যেই সন্ধানী কমিটির মাধ্যমে স্থায়ী উপাচার্য বেছে নিতে হবে। কিন্তু পাঁচ সদস্যের কমিটির কাঠামো নিয়ে কোনও বিধি তৈরি হয়নি। বর্তমানে বিধানসভা অধিবেশনও চলছে না। তাই এ বিষয়ে খসড়া রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত করা হবে। তার পরে রাজ্যপালের সম্মতিক্রমে সেটি অর্ডিন্যান্স হিসাবে জারি করা হবে। আইন বিভাগ ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরের তৈরি ওই খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে বলে খবর।
এই পরিস্থিতি চললেও এখনও রাজ্যের তিন বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত উপাচার্যহীন। সরকারি সূত্রের খবর, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট) এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও নতুন অস্থায়ী উপাচার্য কে হবেন সে বিষয়ে রাজভবন থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি।