ফাইল চিত্র।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ভোট-পরবর্তী অশান্তি রুখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই কড়া বার্তা দিয়েছেন। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই পুলিশকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
বুধবার তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরে মমতা জানিয়েছিলেন, কড়া হাতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবে তাঁর সরকার। নবান্নে গিয়ে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক রদবদল সেরে ফেলার নির্দেশও দেন তিনি। তবে ওই দিনই রাজ্যকে কার্যত ‘হুমকির’ সুরে রাজ্যকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি দল সরাসরি পৌঁছে যায় নবান্নে। সেখানে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা।
রাজ্যের বক্তব্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মে পর্যন্ত রাজ্যে নির্বাচনী বিধি কার্যকর ছিল। ফলে সেই সময়ের মধ্যে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ছিল কমিশনের হাতে। সেই সময়েই আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছে। সরকারের হাতে আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণ আসার পরে তাই এ ব্যাপারে কোনও আপোস না-করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “মানুষ যাতে পুলিশ প্রশাসনের থেকে সহযোগিতা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই নির্দেশই দেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নতুন করে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট এখনই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠাতে হবে না। মন্ত্রকের দলকেই রাজ্য নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। এমনকি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্যের যে সদিচ্ছা নিয়ে মন্ত্রক প্রশ্ন তুলেছিল, তা-ও খণ্ডন করেছে প্রশাসন। শুক্রবার রাজ্যপালের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দল দেখা করে বলে খবর। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপালের মনোভাব এবং তথ্য তাঁরা জানতে চাইতে পারেন বলে প্রশাসনিক একাংশের অনুমান।
জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দলও গত দু’দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, তারা আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছে এবং সমস্যার কথা শুনেছে। কমিশনের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ করছে না। এ দিন কমিশনের দলটি রাজ্যপালের সঙ্গেও দেখা করে এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। কমিশনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল দলের সদস্যদের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের কাছ থেকে অভিযোগের বিস্তারিত খতিয়ান সংগ্রহ করতে বলেছেন এবং প্রয়োজনে পুলিশ আধিকারিকদের কমিশনে তলব করার পরামর্শ দিয়েছেন।