—ফাইল চিত্র।
সর্বনিম্ন ফি ৫০ টাকা। সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।
ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আর যেমন খুশি ফি নিতে পারবে না পঞ্চায়েতগুলি। তা বেঁধে দিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। সেই টাকা জমা দিতে হবে অনলাইনে। দোকান বা কারখানার আয়তনের উপরে ফি নির্ভর করবে। ক’দিন আগে জারি হওয়া ওই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্প ও ব্যবসায়ী মহল।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, ট্রেড লাইসেন্সের নাম করে বেআইনি পথে টাকা নেওয়ার একাধিক অভিযোগ তাঁদের কাছে আসে। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে শিল্প ও ব্যবসার সুবিধার্থেই এই সিদ্ধান্ত। দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সরকার চায় গ্রামেও শিল্প-বাণিজ্যের বিস্তার হোক। ফলে, শিল্পোদ্যোগী ও ব্যবসায়ীদের সামনে পঞ্চায়েতগুলি যাতে কোনও বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেটা সরকার সুনিশ্চিত করতে চায়।’’
পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায় বলেন, ‘‘আমি নতুন মন্ত্রী হয়েছি। ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। যদি কোনও সমস্যা হয়, তা খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মেনেই সিদ্ধান্ত নেব।’’
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে পঞ্চায়েত এলাকায় শিল্প বা ব্যবসা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হবে ওয়েবসাইটে সেই পঞ্চায়েতের নামে একটি নির্দিষ্ট ‘কোড’ থাকবে। সেই ‘কোড’ থেকেই পাওয়া যাবে পঞ্চায়েতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর। ফি এবং কাগজপত্র জমা দিলে সঙ্গে সঙ্গে লাইসেন্স পাওয়া যাবে। একই নিয়ম করা হয়েছে লাইসেন্স নবীকরণের ক্ষেত্রেও।
এত দিন অনেক পঞ্চায়েতই ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ৫০০ টাকার কম ফি নিত না। সর্বোচ্চ ফি-র কোনও সীমা ছিল না। এর বাইরেও অনুদান বাবদ মোটা টাকা নেওয়ার বহু অভিযোগ উঠত। তার কোনও রসিদ দেওয়া হত না, এমন অভিযোগও আছে। অনুদানের ঠেলায় অনেক ব্যবসায়ী এবং শিল্পোদ্যোগী সমস্যায় পড়তেন।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে আবার বিপাকে পড়েছে পঞ্চায়েতগুলি। তাদের নিজস্ব আয়ের একটা বড় অংশ আসে ট্রেড লাইসেন্স থেকেই। নয়া নির্দেশিকাতেও ওই টাকা পঞ্চায়েতের ঘরেই আসার কথা। কিন্তু ‘রেট’ বেঁধে দেওয়ায় টাকার পরিমাণ খুব কম হবে বলে পঞ্চায়েতগুলির আশঙ্কা।
হাওড়ার বাগনান-১ ব্লকের একটি পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, ‘সরকার যে রেট করেছে, তার চেয়ে আমাদের রেট বেশি তো ছিলই। তা ছাড়া, প্রতি তিন বছর অন্তর আমরা লাইসেন্স ফি ৫ শতাংশ করে বাড়াতে পারতাম। নয়া নির্দশিকায় সেই ব্যবস্থা নেই। কিছু পঞ্চায়েতের দুর্নীতির জন্য সৎ ভাবে কাজ করা পঞ্চায়েতগুলিকে শাস্তি দেওয়া হল।’’ একই কথা জানান জেলার একাধিক পঞ্চায়েত প্রধান।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক পদস্থ কর্তা অবশ্য জানান, পঞ্চায়েতের আয় শুধু ট্রেড লাইসেন্সের উপরে নির্ভর করে না। তাদের বার বার বলা হয়েছে আয়ের নতুন ক্ষেত্র খুঁজতে। খুঁজে উঠতে না পারলে তাদের ব্যর্থতা।