১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রীয় নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ রাজ্য সরকারের।
১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। এই মর্মে দু’টি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে নবান্ন থেকে। প্রথমটি ১৪ জুলাই ও দ্বিতীয়টি ২৯ জুলাই প্রকাশ করা হয়েছে। ১০০ দিনের কাজে পাওনা অর্থ নিয়ে জোর গোলমাল শুরু হয়েছে গত কয়েক মাস যাবৎ। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকেই বকেয়া রয়ে গিয়েছে। যার জেরে সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে। সেই সঙ্ঘাতের আবহে এমন বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বাংলার রাজনৈতিক মহল।
নবান্ন থেকে প্রকাশিত এই নির্দেশিকাগুলিতে বলা হয়েছে, কোনও উপভোক্তার জবকার্ড কোনও মতেই পঞ্চায়েতের কোনও আধিকারিক বা সদস্যের কাছে থাকবে না। তথ্য যোগ করার জন্য কারও জবকার্ড নিলেও তা ফেরত দিতে হবে। সেই সঙ্গে যেখানে কাজ হবে, সেখানে প্রকল্পের নাম ও প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য নির্দিষ্ট ভাবে লিখে বোর্ডে লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের নিয়মানুযায়ী সিটিজেন ইনফর্মেশন বোর্ড (সিআইবি) লাগাতে হবে। ১০০ দিনের কাজে কোনও রকম নিয়ম ভাঙা হলে তার দায় জেলা স্তরের প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টিং এজেন্সিকে নিতে হবে, তা-ও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। এমন কিছু ঘটলে ফেরত দিতে হবে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে খরচ হওয়া টাকাও। এবং সব ক্ষেত্রে দায় বহন করতে হবে জেলা প্রশাসনকেই।
পাশাপাশি, ১০০ দিনের কাজের জন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সাতটি রেজিস্টার রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেগুলিতে রাখতে হবে জবকার্ড, গ্রামসভা, কাজের চাহিদা ও আর্থিক লেনেদেন, অভিযোগ ও সরঞ্জাম ইত্যাদি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। তবে পলি তোলার মতো কাজে বেশি আগ্রহ না দেখানোর কথা বলা হয়েছে এই নির্দেশিকায়। এমন নির্দেশিকা প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত ডিসেম্বর থেকে বাংলাকে ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। রাজ্যের জন্য এ বছর কোনও শ্রমদিবসের টার্গেটও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন অদক্ষ শ্রমিকরা। তবে আশা ছাড়েনি রাজ্য। আলাপ আলোচনার মধ্যেই পাওনা আদায়ের চেষ্টা করছে রাজ্য। সেই কারণেই এই নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে।’’
আপাতত রাজ্যের লক্ষ্য ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য অর্থ আদায়। গত সপ্তাহ থেকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ণ মন্ত্রকের একটি একটি প্রতিনিধি দল পশ্চিমবঙ্গে এসেছে। গ্রামীণ এলাকায় ১০০ দিনের কাজ-সহ গ্রামোন্নয়ণের অর্থ যথাযথ খরচ হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। আগামী ২২ অগস্ট পর্যন্ত তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় যাবেন। তাঁরা দিল্লি গিয়ে রিপোর্ট জমা দিলে, তা খতিয়ে দেখে একটি কিস্তির অর্থ ছাড়া হতে পারে বলেই মনে করছে পঞ্চায়েত দফতর। সেই কারণেই সব রকম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাইছেন তাঁরা।