মালদহের মানিকচকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগে বিক্ষোভ স্থানীয়দের একাংশের। নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্রিয় পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন মালদহের মানিকচকের এনায়েৎপুর এলাকার বাসিন্দারা। সেই বিক্ষোভকে ঘিরেই বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। বিক্ষোভকারীদের উপরে পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হন দু’জন। তাঁদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছে স্থানীয়দের একাংশের উপর। তারা জানিয়েছে, ওই বাসিন্দাদের ‘অসহযোগিতা’র কারণেই বিদ্যুতের তিনটি টাওয়ার বসানো যাচ্ছে না। ওই টাওয়ার বসানো হলে পরিষেবা আরও উন্নত হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
মানিকচকের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগে বৃহস্পতিবার পথ অবরোধ করেছিলেন। তাঁদের দাবি, দিনে বহু সময় বিদ্যুৎ থাকছে না সেখানে। সে কারণে বিপাকে পড়ছেন স্থানীয়েরা। এই অবরোধ তুলতে গিয়েই হামলার মুখে পড়ে পুলিশ বলে অভিযোগ। পাল্টা গুলি চালায় তারা। এর পরেই প্রেস বিবৃতি দিয়ে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের কোনও সমস্যা নেই। অন্যান্য রাজ্যে ছয় থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিং হলেও এখানে সেই সমস্যা নেই। এর পরেই মালদহে কেন বিদ্যুৎ থাকছে না, তা বিশদে জানিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মালদহের মানিকচকের এনায়েৎপুরে, যেখানে সমস্যা রয়েছে, সেখানে উন্নত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আরও তিনটি টাওয়ার বসানোর কাজ বাকি রয়েছে। মালদহ পাওয়ার গ্রিড থেকে মানিকচক পর্যন্ত ১৩২ কেভি হট লাইন বসানোর জন্য ৮৯টি টাওয়ারে মধ্যে ৮৬ টাওয়ার বসানো হয়েছে। মালদহের ইংলিশ বাজারে বাকি তিনটি টাওয়ার বসানোর কথা। কিন্তু স্থানীয়দের একাংশের ‘অসহযোগিতা’-র কারণে টাওয়ার বসানো যাচ্ছে না।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, এই টাওয়ার বসানোর জন্য গত ১০ মাস ধরে পুলিশ, প্রশাসন চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতা করার আর্জি জানিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আপনাদের সহযোগিতায় আমরা তিনটি টাওয়ার বসাতে পারলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অন্যান্য জায়গার মতো ওই অঞ্চলেও উন্নত মানের বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারব।’’
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বার বার অভিযোগ করেও বিদ্যুৎ পরিষেবার উন্নতি হয়নি। সেই নিয়েই মানিকচকের ১০টি জায়গায় বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযোগ, অবরোধ সামাল দিতে গিয়েই আক্রান্ত হয় পুলিশ। পাল্টা গুলি ছোড়ে তারা। তাতে আহত হয়েছেন দু’জন। কেন গুলি চালানো হল, সেই নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন। রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে বিরোধীরা।