রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ফাইল চিত্র।
‘হয় ঠিকাদারি করুন, না হলে তৃণমূল করুন। দু’টো একসঙ্গে হবে না।’— একাধিকবার এই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা বলছে, পঞ্চায়েত ভোটে লড়তে বাধা নেই ঠিকাদারদের। কিন্তু প্রার্থী হতে পারবেন না সিভিক ভলান্টিয়ারেরা।
অভিষেকের ঠিকাদার-বার্তার পরই শোরগোল পড়ে। দেখা যায়, দলের বহু পদাধিকারী নিজের বা পরিজনের নামে ঠিকাদারি করেন। কমিশনের এই নির্দেশিকার পরে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঠিকাদার-বিহীন হয় কি না, সেই এখন কৌতূহল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘কমিশন সার্বিক নির্দেশিকা জারি করেছে। তবে, অভিষেক যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেই মাফিক তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হবে।’’ রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কমিশন কী বিধি আনল, সেই নিয়ে মাথাব্যথা নেই। ওটা তৃণমূলের শাখা সংগঠন! তৃণমূল আর ঠিকাদারকে আলাদা করা সম্ভব নয়।’’ সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য নির্দেশিকা খতিয়ে না দেখে বিশদে মন্তব্য করতে চাননি। তবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, এই নির্দেশিকায় শাসকদলের চিন্তাধারার প্রতিফলন রয়েছে। ঠিকাদারদের টাকা ছাড়া তৃণমূল চলবে না। তাই বন্দোবস্ত কমিশনকে দিয়ে করানো হয়েছে।’’
অনেকেরই বক্তব্য, ঠিকাদার হোন বা সিভিক ভলান্টিয়ার, কাউকে প্রার্থী করতে বাধা থাকলে তাঁর স্ত্রী বা পরিজনকে প্রার্থী করার রাস্তা কিন্তু খোলাই থাকছে। নয়া নির্দেশিকা বলছে, ঠিকাদারেরা ভোটে লড়তে পারলেও, পারবেন না সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। প্রার্থী হতে হলে ওই চুক্তিভিত্তিক কাজে ইস্তফা দিতে হবে। ঠিকাদারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তাঁর ঠিকাদারির কাজ চললে, তা শেষ করতে হবে। একই ভাবে ভোটে লড়তে পারবেন না পঞ্চায়েতের কর সংগ্রাহক, রেশন ডিলার, হোমগার্ড, শিক্ষাবন্ধু, চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ ডি কর্মী প্রভৃতি পেশায় যুক্তরা। তবে ভোটে লড়তে বাধা নেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকা, আশা কর্মী, স্কুলের শিক্ষকদের।