প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটের পরে ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস’-এ নিহত, আহত এবং ঘরছাড়া কর্মীদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে অবশেষে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পেল রাজ্য বিজেপি। ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের পরিবারের কাছে সেই টাকা পাঠানোও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রের খবর, ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল। রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে বার বার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছিল, যে সব দলীয় কর্মী ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার, তাঁদের পরিবারকে অর্থ সাহায্য করতে বিপুল টাকা প্রয়োজন। রাজ্য দলের কোষাগারে অত টাকা নেই। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অর্থ সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিলেন রাজ্য নেতৃত্ব। দলের নিহত, আহত এবং ঘরছাড়া কর্মীদের তালিকাও পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। কিন্তু টাকা আসেনি। ফলে, হিংসার শিকার দলীয় কর্মীদের পাশে নেতৃত্ব দাঁড়াচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল বিজেপি-র অন্দরে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সর্বভারতীয় নেতৃত্বকে পরিস্থিতি জানিয়েছিলেন। বিজেপির সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত দফায় দফায় রাজ্যে সাংগঠনিক বৈঠক করেন। সেখানেও এ নিয়ে অভিযোগ করেন রাজ্য নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, তার পরেই দিল্লিতে ফোন করে টাকার ব্যবস্থা করেন শিবপ্রকাশ।
রাজ্য বিজেপির একাংশের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের আগে এ রাজ্যে সরকার গড়ার আশায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব টাকার ব্যাপারে খুবই উপুড় হস্ত ছিলেন। কিন্তু ভোটে হেরে যাওয়ার পরে এখানে খরচে রাশ টেনেছেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই মনোভাব নিয়ে রাজ্য বিজেপির কেউ অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তবে দলের ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের অর্থ সাহায্য দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজনৈতিক হিংসায় আমাদের কর্মীদের ক্ষতি এত বিপুল যে, রাজ্য দলের কোষাগার নিশেষ করেও সকলকে সব রকম সাহায্য দেওয়া যায়নি। এখন আবার টাকা পাঠানো হচ্ছে। দলের সব ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’
তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘ভোটের আগে ভোট কিনতে টাকা ছড়িয়েছিল। এখন দলের ভাঙন ঠেকাতে টাকা ছড়াচ্ছে! প্রকাশ্যে তালিকা দিয়ে জানাক, কোথায় কোন ক্ষতিগ্রস্তকে কত টাকা দিয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘তবে আদি ও তৎকাল বিজেপির লড়াইয়ে কিছু লোকের ক্ষতি হয়েছে, তা ঠিক।’’