—ফাইল চিত্র।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট ইডিকে পাঠাতে চলেছে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। অন্তত তেমনই খবর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে। ‘আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায়’ গত শুক্রবার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’কে এসএসকেএম থেকে জোকা ইএসআই-তে নিয়ে যেতে পারেনি ইডি। অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে গিয়েও ফিরে যেতে হয়েছিল তাদের। ইডিকে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, হঠাৎ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় কার্ডিয়োলজির এক নম্বর কেবিন থেকে ‘কাকু’কে আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তার পর সোমবার এসএসকেএম সূত্রে খবর মিলল, তাঁর স্বাস্থ্য-রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সংস্থাকে পাঠানো হবে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সুজয়কৃষ্ণের অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি করে জানা গিয়েছে, তাঁর রক্তনালির বিভিন্ন জায়গায় ক্যালশিয়ার জমেছে। যার ফলে প্লেক তৈরি হয়েছে। যার ফলে হৃদ্যন্ত্রের রক্তবাহী নালিতে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে নাড়ির গতি বেড়ে গিয়েছে। রক্তচাপ কমে যাচ্ছে।
ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, শুক্রবারই সুজয়কৃষ্ণের গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠাতে চায় তারা। নিয়োগ মামলায় সুজয়কে গ্রেফতার করেছে ইডি। তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর গলার স্বরের নমুনা অনেক দিন ধরে সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কিন্তু বার বার তাতে বাধা আসছে বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও ইডি প্রশ্ন তুলেছে। অন্য দিকে, এসএসকেএম থেকে জানানো হয়েছে, গলার স্বরের নমুনা দিতে প্রস্তুত নন সুজয়। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তাই তাঁর স্বরের নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি এত দিন।
আদালতের নির্দেশে ‘কালীঘাটের কাকু’র স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাই জোকা ইএসআই হাসপাতালে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত সেই বোর্ড বিবেচনা করে দেখবে, আদৌ সুজয় গলার স্বরের নমুনা দিতে শারীরিক ভাবে প্রস্তুত কি না। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সুজয়কে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে আগে মেডিক্যাল বোর্ড তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখবে। যদি তাঁরা সবুজ সঙ্কেত দেন, তবেই সংগ্রহ করা যাবে ‘কাকু’র গলার স্বরের নমুনা। ইতিমধ্যে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে সুজয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট ইডিকে দেওয়া হয়েছে। ওই হাসপাতালে ভর্তি আছেন রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টও ইডিকে পাঠিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ইডি একটি বিশেষ অডিয়ো রেকর্ডিং পায়। সেখানে সুজয়ের গলার স্বর শোনা গিয়েছে বলে দাবি। কিন্তু তা প্রমাণসাপেক্ষ। সেই কারণেই সুজয়ের গলার স্বরের সঙ্গে ওই নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে। শুক্রবার সেই নমুনা সংগ্রহ করা যায় কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।