উৎসবের মরসুমে আশ্বাসটা এল তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের কাছ থেকে। তারই ভিত্তিতে ৭৬ দিনের মাথায় অনশন প্রত্যাহার করে নিলেন স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডার উপস্থিতিতে তাঁরা আড়াই মাসের অনশন তুলে নেন।
শঙ্কুদেব এ দিন জানান, স্কুলে শিক্ষক-পদ প্রার্থীদের দাবি নিয়ে চলতি মাসের ২০ তারিখে তিনি এবং দলের অন্য নেতারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন। আইন মেনে ওই প্রার্থীদের মধ্যে কত জনকে চাকরি দেওয়া যায়, সে-দিনই তা জানিয়ে দেওয়া হবে। তার পরেই অনশন তুলে নেন প্রার্থীরা। পরে ওই প্রার্থীরা জানান, মুকুলবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে বলে আইন মেনে তাঁদের সমস্যার সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন। আর সেই আশ্বাস পেয়েই তাঁরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।
এসএসসি-র চূড়ান্ত মেধা-তালিকায় ঠাঁই হলেও চাকরির সুযোগ না-পাওয়ায় ছাত্র ঐক্য সংগ্রাম মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলন শুরু করেন বেশ কিছু প্রার্থী। ফেব্রুয়ারির ৬ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত সল্টলেকে এসএসসি ভবনের সামনে অনশন চালানোর পরে সরকারি আশ্বাস পেয়ে তখনকার মতো তাঁরা আন্দোলন তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে শিক্ষা দফতর তা অস্বীকার করায় ফের আন্দোলনে নামেন ওই প্রার্থীরা। দ্বিতীয় দফায় তাঁদের অনশন শুরু হয় ৬ জুন। ৭৬ দিন অনশন চলাকালীন অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েন। তার পরেই অনশনকারীরা ঠিক করেন, নিজেদের দাবি নিয়ে শাসক দলের কাছে যাবেন।
ছাত্র ঐক্য সংগ্রাম মঞ্চের তরফে প্রদ্যোত হালদার জানান, তাঁরা বেশ কয়েক দিন আগে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুলবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের বক্তব্য জানানোর ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য তাঁর কাছে আবেদনও করেন তাঁরা। তখনই মুকুলবাবু তাঁদের জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানাবেন। তাঁর ডাকে মঙ্গলবার বেলা দেড়টায় তৃণমূল ভবনে আলোচনায় বসেন অনশনরত প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা। সেখানে মুকুলবাবু জানান, দাবিদাওয়া নিয়ে দু’ভাবে এগোলে চলবে না। অনশন করে সরকার-বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া এবং সমস্যার সমাধানে সরকারের সাহায্য প্রার্থনা, দু’টো একসঙ্গে চলতে পারে না। মুকুলবাবু ওই দিনই অনশন তুলে নিয়ে সরকারের উপরে ভরসা রাখার জন্য তাঁদের কাছে আবেদন জানান।
সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে এবং সরকারের উপরে আস্থা রেখেই তাঁরা এ দিন অনশন তুলে নিয়েছেন বলে জানান চাকরি-প্রার্থীরা।