ফাইল চিত্র।
এসএসসি-দুর্নীতির তদন্তে যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই, তাঁদের কারও কারও সঙ্গে কি উপেন বিশ্বাসের ভিডিয়োখ্যাত ‘রঞ্জনের’ ঘনিষ্ঠতা ছিল? বাগদার অনেকেই জানাচ্ছেন, রঞ্জন এক সময়ে দাবি করতেন, প্রভাবশালীদের অনেককে তিনি চেনেন। তাঁর হাত অনেক দূর লম্বা। এবং এলাকায় তিনি যে ভাবে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, তাতে এখন তদন্তে সেই রঞ্জন-কথিত যোগাযোগ প্রকাশ পাবে বলেই তাঁদের আশা। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার কথায়, ‘‘স্থানীয় সূত্রে জানতে পেরেছি, রঞ্জন বলতেন, তিনি নাকি রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর আত্মীয়।’’
এ দিকে, সিবিআইয়ের ফাঁস যত কড়া হচ্ছে, রঞ্জন কোন রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ— তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস অধিকারী বলেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে বাগদায় তৃণমূলের হয়ে দেদার টাকা খরচ করেছিলেন রঞ্জন।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘রঞ্জন আমাদের দলের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কখনওই যুক্ত ছিলেন না। উপেনবাবু বাগদার বিধায়ক ছিলেন। উনি হয় তো রঞ্জন সম্পর্কে জেনে থাকবেন।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘শুনেছি, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে রঞ্জন বিজেপির হয়ে টাকা খরচ করেছিলেন।’’
‘রঞ্জন’ যে আসলে গোটা দুর্নীতিচক্রে হিমশৈলের চূড়া, সে কথা আগেই দাবি করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা উপেন বিশ্বাস। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতিচক্রে রঞ্জন একটি বিন্দুমাত্র (ডট)।’’ বছরখানেক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘রঞ্জন সৎ’ নামে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন উপেন। ভিডিয়োয় তিনি দাবি করেন, টাকা নিয়ে বহু যুবক-যুবতীকে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাসিন্দা ‘রঞ্জন’। ‘গোপনীয়তার স্বার্থে’ তিনি রঞ্জনের আসল নাম জানাননি। এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার। তবে ভিডিয়োটি তাঁরই বলে জানিয়েছেন উপেন।
এ প্রসঙ্গে সোমবার উপেন বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি একটি সংগঠিত অপরাধ বা দুর্নীতি। যদি এটাকে মাকড়সার জাল বলে ধরা হয়, তা হলে রঞ্জন সেই জালের একটা অংশ বা ডট। জালের মাঝখানে যে মাকড়সা বসে আছে, সে-ই আসলে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেছে।’’ বাগকমিটির তদন্ত সিবিআইয়ের কাজ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে বলেই মনে করেন উপেন। সিবিআই এ বার তদন্ত করে এই দুর্নীতির মাথাদের খুঁজে বের করুক, সেটাও চাইছেন তিনি।