ধৃত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
আবার ‘ডায়েরি রহস্য’। নব্বইয়ের দশকের হাওয়ালা-কাণ্ডে সুরেন্দ্র জৈন কিংবা বছর আটেক আগে সহারা কর্তা সুব্রত রায়ের পরে এ বার ‘রহস্যের’ কেন্দ্রে ধৃত মডেল-অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর টালিগঞ্জের করুণাময়ীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ এবং গয়নার পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তদন্তকারী দল একটি কালো রঙের ডায়েরি উদ্ধার করেছে বলেও সূত্রের খবর।
ইডি-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজ্য শিক্ষা দফতরের নাম লেখা ওই ডায়েরিতে অর্থ লেনদেনের কিছু হিসাব এবং কয়েক জন ব্যক্তির নামের উল্লেখ রয়েছে। এর আগে ইডি জানিয়েছিল, অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল অর্থের সঙ্গে এসএসসি-র নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির ‘যোগসূত্র রয়েছে’ বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীরা এখন ওই ডায়েরির সূত্র ধরেই সেই ‘মিসিং লিঙ্ক’-এর অনুসন্ধান শুরু করেছেন।
এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে নেমে শুক্রবার টালিগঞ্জে অর্পিতার ফ্ল্যাটে ইডি তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়, অর্পিতার ফ্ল্যাটে সেখানে মিলেছে নগদ ২১ কোটি টাকা এবং বেশ কয়েকটি মোবাইল। মিলেছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার অলঙ্কারও। সোমবার বিশেষ আদালতে তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, এসএসসি নিয়োগ মামলায় ধৃত রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী (প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতার নামে যৌথ সম্পত্তির হদিসও মিলেছে।
প্রসঙ্গত, নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় ব্যবসায়ী সুরেন্দ্র এবং তাঁর আত্মীয়দের ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। সেই তল্লাশিতে বিদেশি মুদ্রার পাশাপাশি দু’টি ডায়েরি উদ্ধার হয়েছিল। তাতে বেশ কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং আমলার নামের আদ্যাক্ষর পাওয়া গিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তার মধ্যে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর নাম ছিল বলেও অভিযোগ। ২০১৪-র নভেম্বরে সহারা-কর্তা সুব্রতের দফতরে হানা দিয়ে সিবিআই ১২০ পাতার একটি ‘রহস্যময়’ লাল ডায়েরি পেয়েছিল বলে অভিযোগ। তাতে বেআইনি ভাবে বাজার থেকে টাকা তোলার হিসেবের সঙ্গে ছিল একটি নামের আদ্যক্ষর— ‘এনএম’! অভিযোগ উঠেছিল, ওই নাম তৎকালীন বিজেপি সভাপতি তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের।