SSC

প্রধান শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও বহু স্কুলে সেই পদে নিয়োগ! অভিযুক্ত এসএসসি

এখনও এই সমস্যার সমাধানসূত্র মেলেনি। স্কুল শিক্ষা দফতর এবং এসএসসি-র মধ্যে এই নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ১৫:৫৯
Share:

এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার (বাঁ দিকে), প্রতিবাদী শিক্ষক নন্দীশ নিয়োগী (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন, তা-ও ওই পদে নিয়োগের সুপারিশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকের পদে আবেদনকারীরা। কাউন্সেলিংয়ের পর তাঁরা জানতে পারেন, যে স্কুলে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, সেখান আগে থেকেই প্রধান শিক্ষক রয়েছেন!

Advertisement

অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় বাসন্তী সেন্ট জেভিয়ার্স হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক নন্দীশ নিয়োগীকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার। এই বিভ্রান্তি নিয়ে ফেসবুকে সরব হয়েছিলেন নন্দীশবাবু। প্রধান শিক্ষক পদে কাউন্সেলিংয়ে সফল হওয়ার পর তাঁকে নেগুনা সুন্দর নারায়ণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে সুপারিশ করে এসএসসি। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তিনি ওই স্কুলের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন, সেখানে গত কয়েক বছর ধরে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন।

বিষয়টি জানার পর নন্দীশবাবু স্কুল সার্ভিস কমিশনে বিষয়টি জানাতে যান। ঘটনাচক্রে ওই দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানও। নন্দীশবাবুর অভিযোগ, তাঁকে যে শুধু অসম্মান করা হয় তাই নয়, তাঁকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করা হয়, আপনার প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নেই!

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘শক্তি পরীক্ষায় ভয় পাচ্ছে বিজেপি, কর্নাটকে জিতব আমরাই’, দাবি সিদ্দারামাইয়ার​

এর পরেই বিষয়টি তিনি ফেসবুকে তুলে ধরেন। নন্দীশবাবুর অভিযোগ, তার পরেই খোদ সৌমিত্র সরকার তাঁকে ফোন করে হুমকি দেন। তাঁকে চাপ দিয়ে বলা হয়, ‘আপনি ফেসবুকে চেয়ারম্যানের নামে লিখতে পারেন না। ওই পোস্ট মুছে ফেলে লিখুন, ভুল হয়ে গিয়েছে। আপনি গোখরো সাপের লেজে পা দিয়েছেন। আমি এ বার কী করি দেখবেন!’

নন্দীশবাবুর মতোই মুর্শিদাবাদ জেলার এক শিক্ষিকাও (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একই অভিযোগ এনেছেন। যে স্কুলে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন, তাঁকে সেখানেই নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। নন্দীশবাবু বা ওই শিক্ষিকাই শুধু নন, তাঁদের মতো আরও কয়েক জন একই ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।

এখনও এই সমস্যার সমাধানসূত্র মেলেনি। স্কুল শিক্ষা দফতর এবং এসএসসি-র মধ্যে এই নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এসএসসি সূত্রে খবর, স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়, সেই অনুসারে রেকমেন্ডেশন লেটার দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় ডিআই-রা দেখেন, কোন স্কুলে কী কী পদ শূন্য রয়েছে? সেই রিপোর্ট আসে স্কুলশিক্ষা দফতরে। তার পর এসএসসি-র কাছে আসে সেই তালিকা।

প্রধান শিক্ষক নিয়োগের রেকমেন্ডেশন লেটার। —নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানো যায় না, বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী​

এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, “এতে আমাদের কোনও দোষ নেই। স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে যেমন তালিকা এসেছে, তার ভিত্তিতেই কাউন্সেলিং হয়েছে।” তবে তাঁর বিরুদ্ধে তোলা নন্দীশবাবুর অভিযোগ অস্বীকার করেন সৌমিত্রবাবু।

এমনিতেই এসএসসি-র মাধ্যমে স্কুলস্তরের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ সরব চাকরিপ্রার্থীরা। এ বার নন্দীশ নিয়োগীর মতো বেশ কয়েক জন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সরব হয়েছেন।

নন্দীশবাবুর অভিযোগ, “ভুল তো আমরা করিনি। যাঁরা এই তালিকা তৈরি করছেন, তাঁদের খেয়াল রাখা উচিত। আমাদের সামনে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে, এমন স্কুলের তালিকাই দেওয়া হয়েছিল। কাউন্সেলিংয়ের সময় আমরা তাই বেছে নিয়েছি।”

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement