GST

সিগারেট ও বিমায় কি জিএসটি বদল

২০২৬-এর মার্চ মাসে এই সেস জমানায় ইতি পড়বে। তার পরে এই সব পণ্যে কী হারে জিএসটি আদায় করা হবে, তা ঠিক করতে একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী, চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

নয়াদিল্লি, কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৪১
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সিগারেট, তামাক, সোডা জাতীয় নরম পানীয়ের উপরে কি এ বার ৩৫ শতাংশ জিএসটি বসবে?

Advertisement

আগামী সপ্তাহে জিএসটি পরিষদের বৈঠকের আগে এই প্রশ্ন নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী, শিল্প মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। বৈঠকের আগেই চর্চা থামাতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক দাবি করছে, এখনও এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যে সিদ্ধান্তই হবে, তা কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

জিএসটি চালুর পরে রাজ্যগুলির রাজস্ব আয়ে লোকসান হলে তা মেটানোর জন্য ক্ষতিপূরণ সেস আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সিগারেট, তামাকের মতো শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক পণ্য, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক পণ্য এবং বিলাসবহুল পণ্যের উপরে ২৮ শতাংশের সর্বোচ্চ হারে জিএসটি-র উপরে অতিরিক্ত সেস আদায় করা হত। যেমন গুটখার উপরে ২৮ শতাংশ জিএসটি-র উপরেও ২০৪ শতাংশ সেস আদায় করা হয়। ফলে গুটখার উপরে করের পরিমাণ ২৫২ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়।

Advertisement

২০২৬-এর মার্চ মাসে এই সেস জমানায় ইতি পড়বে। তার পরে এই সব পণ্যে কী হারে জিএসটি আদায় করা হবে, তা ঠিক করতে একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। তাতে সিগারেট, তামাক, সোডা জাতীয় পণ্যে ৩৫ শতাংশ জিএসটি আদায়ের প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ী মহল মনে করছে, বেশি মাত্রায় জিএসটি চাপানো হলে এ সবের বিক্রি কমবে। তাতে ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাবদ আয় কমবে। উল্টো দিকে কালোবাজারে সিগারেট, তামাক, সোডা পানীয়ের বিক্রি বাড়বে। এমনিতেই জিএসটি-তে চার রকম করের হার রয়েছে। আরও একটি নতুন ৩৫ শতাংশ জিএসটি করের হার চাপলে জটিলতা বাড়বে। ব্যবসায়ীদের বোঝা বাড়বে। অর্থ মন্ত্রকের দাবি, এ বিষয়ে কিছুই সিদ্ধান্ত হয়নি। মন্ত্রিগোষ্ঠীকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। তার আগেই ২১ ডিসেম্বর রাজস্থানের জয়সলমেরে জিএসটি পরিষদের বৈঠক বসছে। সেখানে মন্ত্রিগোষ্ঠী তার রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বাড়তি সময় চাইতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী, স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে জিএসটি কমানোর দাবি তুলেছিলেন। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তৈরি মন্ত্রিগোষ্ঠী প্রবীণদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি মকুবের প্রস্তাব দিয়েছে। আর্থিক বিশেষজ্ঞ থেকে শিল্পমহলের কর্তারা মনে করছেন, স্বাস্থ্যবিমায় প্রিমিয়ামের খরচ কমলে আরও বেশি মানুষ স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আসবেন। কিন্তু যতখানি জিএসটি ছাড় হবে, ততখানি বিমার খরচ কমবে না। কারণ বিমা সংস্থাগুলি যে ‘ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট’-এর সুবিধা পায়, তা পাবে না।

সরকারি সূত্রের খবর, কর্মসংস্থানমুখী শিল্পের কথা ভেবে দেড় হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার দামের পোশাকের উপরে ৫% এবং তার বেশি দামের পোশাকের উপর ১৮% জিএসটি বসানোর প্রস্তাব রয়েছে। বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ক্ষেত্রে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং ৪০ লক্ষ টাকার বেশি দামের গাড়ির উপর পৃথক হারে জিএসটি বসানোর প্রস্তাবও রয়েছে। একটি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘পোশাক শিল্পের সঙ্গে বহু মানুষ যুক্ত থাকেন। আবার বৈদ্যুতিন গাড়ি কেনায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে এখন। ফলে সেই দিকগুলি মাথায় রেখেই জিএসটি পরিষদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement