Mamata Banerjee

‘ভারসাম্যে’র বার্তা দিতে মমতা-নজরে প্রবীণেরাও

দলের একাংশের মত, ক্ষমতার দড়ি টানাটানিতে নবীনদের রাশ টানার পরে মমতা এ বার পুরনো নেতাদের সম্পর্কেও ‘মনোভাব’ নির্দিষ্ট করে দিচ্ছেন।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৭
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

মালদহ-মুর্শিদাবাদ সফরে সঙ্গে নেই ফিরহাদ হাকিম। আলিপুরদুয়ারে সঙ্গে নেই অরূপ বিশ্বাস।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক জেলা সফরে জোড়া মন্ত্রীর ‘অর্ন্তধান রহস্য’ দলের অভ্যন্তরীণ বিন্যাস নিয়ে নয়া জল্পনা তৈরি করেছে তৃণমূলে। দলের একাংশের মত, ক্ষমতার দড়ি টানাটানিতে নবীনদের রাশ টানার পরে মমতা এ বার পুরনো নেতাদের সম্পর্কেও ‘মনোভাব’ নির্দিষ্ট করে দিচ্ছেন। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে নেত্রীর এই পদক্ষেপেই সংগঠনের অভিমুখ দেখছেন অনেকে।

মমতা ইতিমধ্যে স্পষ্ট করেছেন, দল চালাবেন তিনিই। তৃণমূলের বড় অংশের মত, দলের অন্দরে ক্ষমতার ‘সমান্তরাল কেন্দ্র’ হয়ে ওঠা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীদের উদ্দেশেই এই বার্তা দিয়েছেন মমতা। তাঁরাই মনে করছেন, শুধু নবীন নয়, প্রবীণদের জন্যও ‘সীমা’ ঠিক করে দিতে চাইছেন তিনি। তাই এ বার ঠিক উল্টো দিকেও তাঁর মনোভাবে ‘বদল’ চোখে পড়ছে দলীয় নেতাদের। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক বেশ কিছু কাজে দিদি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হতে কিছুটা সময় লাগবে।”

Advertisement

রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন সম্পর্কিত কাজে উপদেষ্টা হিসেবে বামফ্রন্ট সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুস সাত্তারকে নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ব্যাপারে দলের পরিচিত সংখ্যালঘু নেতাদের এড়িয়েই সাত্তার সরাসরি কাজ করছেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে। তৃণমূল সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী মমতা বাদে একমাত্র যোগাযোগ রাখছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে। সেই পর্বে ফিরহাদের ভূমিকা ‘ব্রাত্য’ হয়ে যাওয়ায় প্রবীণ শিবিরে কাটছাঁট নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল।

এ বার মুর্শিদাবাদ ও মালদহ সফরে ফিরহাদ না-থাকায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। এই দুই জেলার সঙ্গে লাগোয়া উত্তর দিনাজপুরে দলের বেশ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকে। মমতার নির্দেশেই সম্প্রতি সামিরুলকে দলের সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ করা হয়েছে। জেলা সংগঠনের দায়িত্বও বুঝিয়ে দিয়েছেন বক্সী। সেই সূত্রে উত্তরবঙ্গ সফরে মমতার সঙ্গে অরূপের না-থাকাও চোখে পড়েছে দলের নেতাদের। জেলা তিনটির সংগঠনের দায়িত্বে থাকা অরূপের ‘সীমা’ নিয়েও অনেকের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। যদিও সেখানে এখনও আলাদা করে কাউকে যুক্ত করা হয়নি।

দলের আসন্ন সাধারণ সভার আগে তৃণমূলের সাংগঠনিক অভিমুখ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেরই মতে, মমতা যেমন অভিষেককে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া শিবিরে ধাক্কা দিয়েছেন, কাজের নিরিখে সতর্ক থাকছেন প্রবীণদের সম্পর্কেও। অভিষেকের প্রস্তাবিত রদবদল নিয়ে ‘ধীরে চলো’ অবস্থান নিলেও সংগঠনের ‘ঘষামাজা’ করবেন নিজে। সাধারণ সভায় তার রূপরেখা স্পষ্ট করে দিতে পারেন তিনি। দলের এক নেতার কথায়, “কয়েক মাস ধরেই এই মূল্যায়নে দিদি অনেকটা সময় দিচ্ছেন। সংগঠন নিয়ে তাঁর কাছে সরাসরি যে সব প্রস্তাব আসছে, খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিচ্ছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement