গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কেন্দ্রীয় বাজেট ঘিরে প্রত্যাশা রয়েছে। কিন্তু তাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের ‘জট’ কাটার ইঙ্গিত কতটা থাকবে, তা নিয়ে ধন্দে রাজ্য প্রশাসনিক কর্তারা। উদ্বেগ বাড়ছে বিশেষ করে একশো দিনের কাজ এবং আবাস প্রকল্প নিয়ে।
নবান্ন সভাঘরে ষোড়শ অর্থ কমিশনের গত বৈঠকে কেন্দ্রের থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা বকেয়া থাকার অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজস্থানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ডাকা প্রাক্-বাজেট বৈঠকেও বকেয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও। একশো দিনের কাজ ছাড়াও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন, গ্রাম সড়ক যোজনার মতো প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধ থাকার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন তিনি। তাই আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটে রাজ্যের ভাঁড়ারে কী প্রাপ্তি হবে বা রাজ্যের দাবিদাওয়ার কোনও প্রতিফলন থাকবে কি না, তা নিয়ে চর্চা রয়েছে প্রশাসনিক মহলে।
সংশ্লিষ্ট কর্তারা জানাচ্ছেন, গত কেন্দ্রীয় বাজেটে (২০২৪-২৫ তথা চলতি আর্থিক বছরের জন্য) একশো দিন বা আবাসে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের উল্লেখ থাকলেও, এ রাজ্যের প্রাপ্তি শূন্যই ছিল। প্রত্যাশা রয়েছে, আসন্ন বাজেটে হয়তো অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে। কিন্তু আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, একশো দিনের প্রকল্পে কর্মদিবসের অনুমোদন এখনও মেলেনি কেন্দ্রের থেকে। ফলে ওই প্রকল্পে রাজ্য আদৌ বরাদ্দ পাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। আবাসের ক্ষেত্রেও একই অনুমান সংশ্লিষ্টদের।
রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কথায়, “গত বছরের বাজেটে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা স্পষ্ট ছিল। এ বার তার পুনরাবৃত্তি হয় কি না, তা বাজেট দেখেই বোঝা যাবে। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী এখনও কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর বৈঠকের সময় পেলেন না! সেখানেও কি সেকশন-২৭ (যে ধারা কার্যকর করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলিতে বরাদ্দ বন্ধ করেছে কেন্দ্র) কার্যকর রয়েছে?”
তৃতীয় এনডিএ সরকার গঠিত হওয়ার পরেই নতুন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সাক্ষাৎ চেয়ে আসছে রাজ্য। কিছু দিন আগে এ ব্যাপারে চিঠিও দিয়েছিলেন প্রদীপ। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের খবর, সময় দেওয়ার ব্যাপারে শিবরাজ ইতিবাচক ইঙ্গিত দিলেও, সময় এখনও মেলেনি। কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে তা পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। সে ক্ষেত্রে তার আগে তথ্য-সহ রাজ্যের বক্তব্য শিবরাজকে জানানো সম্ভব হবে না।
গত বাজেটে আবাস খাতে ১০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। গ্রাম সড়ক যোজনাতেও ২৫ হাজার গ্রামে সড়ক তৈরির কথা ছিল। তার পরেও বঙ্গ কিছু পায়নি বলেই দাবি আধিকারিকদের। এ বার কী প্রস্তাব বাজেটে থাকে, নজর রয়েছে সে দিকে।