ওয়াশিংটনের পটোম্যাক নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স। ছবি: পিটিআই।
আমেরিকার বিমান দুর্ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। পটোম্যাক নদীতে উদ্ধারকাজ থামিয়ে দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে (স্থানীয় সময়)। হিমশীতল জলে সাঁতার কাটা আর সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে আবার উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে নদী থেকে ৪০টির বেশি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মিলেছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত যাত্রিবাহী বিমানটির ব্ল্যাকবক্স।
বিমানের উড়ান সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য রেকর্ড করা এবং ককপিটের কথোপকথন রেকর্ড করার যন্ত্রের নাম ব্ল্যাকবক্স। প্রত্যেক বিমানেই এই যন্ত্র থাকে। ওয়াশিংটনে সেনার চপারের সঙ্গে সংঘর্ষের পর আমেরিকান এয়ারলাইন্সের বিমানটি ভেঙে পড়ে পটোম্যাক নদীর উপর। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার ব্ল্যাকবক্সটি উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি নিয়ে যাওয়া হবে নিকটবর্তী এনটিএসবি গবেষণাগারে। সেখানে পরীক্ষানিরীক্ষার পর ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সংঘর্ষের ঠিক আগের মুহূর্তে ককপিটে কী কথা হয়েছিল, তা জানা যেতে পারে ব্ল্যাকবক্স থেকে। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কেও তথ্য মিলতে পারে।
আমেরিকান এয়ারলাইন্সের বিমানটির অবতরণের কথা ছিল রেগান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল বিমানবন্দরে। অভিযোগ, ঘটনার সময়ে সেখানে পর্যাপ্ত কর্মচারী ছিলেন না। বিবিসি জানিয়েছে, সাধারণত বিমান এবং হেলিকপ্টারের ‘ট্র্যাফিক’ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিমানবন্দরে দু’জন করে কর্মী দায়িত্বে থাকেন। কিন্তু দুর্ঘটনার সময়ে ছিলেন এক জন কর্মী। কেন বিমানবন্দরে কম সংখ্যক কর্মী ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যাত্রিবাহী বিমানটিতে মোট ৬৪ জন ছিলেন। চপারে ছিলেন পাইলট-সহ তিন জন। এই দুর্ঘটনায় ৬৭ জনেরই মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। পটোম্যাক নদীতে জল এই মুহূর্তে বরফের মতো ঠান্ডা। তাতে নেমেই চলছে উদ্ধারকাজ। কখনও উদ্ধারকারীরা দেহ তুলে আনছেন, কখনও জল থেকে উঠছে দেহাংশ।
বিমান দুর্ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যে দায়ী করেছেন পূর্বতন সরকাররের নীতিকে। অভিযোগ, জো বাইডেন এবং বারাক ওবামা প্রশাসন আমেরিকার বিমান বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈচিত্রকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তার ফলে বিমান পরিষেবার সুরক্ষার সঙ্গে আপস করা হয়েছে। নীতি মানতে গিয়ে অনেক অযোগ্য কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে, দাবি ট্রাম্পের। মনে করা হচ্ছে, বিমানের সঙ্গে একই উচ্চতা এবং একই লাইনে চপারটি চলে আসায় এই দুর্ঘটনা। ট্রাম্প প্রশ্ন তুলেছেন, কেন বিমান দেখেও চপারটি তার সামনে থেকে সরে গেল না। বিমানবন্দর থেকেই বা কেন চপারকে পর্যাপ্ত নির্দেশ দেওয়া হল না, প্রশ্ন উঠেছে।