Government Schemes

প্রসঙ্গ প্রকল্পের নামকরণ, মোদী-মমতা বৈঠকের পরে নমনীয় হতে চলেছে কেন্দ্র-রাজ্য দু’তরফই

প্রশাসনিক কর্তারা যে ইঙ্গিত পাচ্ছেন, তাতে মোদী-মমতা বৈঠকের পরে কেন্দ্র-রাজ্য উভয়পক্ষই নমনীয় অবস্থান নিতে চলেছে। তাতে আগামী দিনে কেউ মানবে ‘রং’, কেউ মানবে ‘নাম’।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৯
Share:

(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত একাধিক প্রকল্পে অর্থ মন্ত্রকের ‘ব্র্যান্ডিং’ বিধির তোয়াক্কা করছে না পশ্চিমবঙ্গ— সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির বরাদ্দ বন্ধের নেপথ্যে কেন্দ্রের তোলা এই অভিযোগ ছিল অন্যতম বড় কারণ।

Advertisement

বরাদ্দে অংশীদারির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিল রাজ্যও। প্রশাসনিক কর্তারা যে ইঙ্গিত পাচ্ছেন, তাতে মোদী-মমতা বৈঠকের পরে কেন্দ্র-রাজ্য উভয়পক্ষই নমনীয় অবস্থান নিতে চলেছে। তাতে আগামী দিনে কেউ মানবে ‘রং’, কেউ মানবে ‘নাম’।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে বরাদ্দের জট খুলতে প্রস্তাবিত যৌথ কমিটিতে রাজ্যের প্রতিনিধি বাছাইয়ের কাজও শেষ। প্রকল্পগুলির বরাদ্দের জট কাটাতে তেমনই স্থির হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে।

Advertisement

অর্থ মন্ত্রকের বিধি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত প্রকল্পগুলিতে নাম, প্রচার, লোগো ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নির্দিষ্ট নিয়মই (ব্র্যান্ডিং) মেনে চলতে হয়। রাজ্য তা নিজের মতো বদল করতে পারে না। কিন্তু তেমন বেশিরভাগ প্রকল্পে কেন্দ্র-রাজ্যের বরাদ্দের অংশীদারি ৬০:৪০। সেই যুক্তিতে একাধিক প্রকল্পের প্রচার কার্যত নিজের মতো করেই এত দিন চালাচ্ছিল রাজ্য। নামকরণও করা হয় নিজের মতো করে। যা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের টানাপড়েন চলেছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ বা সড়ক যোজনার মতো প্রকল্প ঘিরে।

প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, আপাতত এই প্রশ্নে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে একটা সমঝোতার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। তাতে ওই ব্র্যান্ডিং-এর কিছু শর্ত মেনে নিতে পারে কেন্দ্র। কিছু কার্যকর করতে পারে রাজ্যও। তার প্রাথমিক একটা প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, এমন প্রকল্পের আওতায় কিছু পরিকাঠামো এমন থাকছে, যেখানে রাজ্য নিজের পছন্দের নীল-সাদা রং করেছে। এ নিয়ে বারে বারে আপত্তি তুলেছে কেন্দ্র। লিখিত ভাবে সতর্কও করা হয়েছে রাজ্যকে। প্রশাসনিক সূত্রের অনুমান, শেষপর্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিক খাতে ঘটনাক্রম প্রবাহিত হলে, আগামী দিনে এ নিয়ে আর আপত্তি তুলবে না কেন্দ্র। কেন্দ্রের স্থির করা প্রকল্পের নাম ব্যবহারে আপত্তি তুলবে না রাজ্যও। যেমন শুরু হয়েছে জলজীবন মিশন (রাজ্যের নাম ছিল জলস্বপ্ন), প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (রাজ্যের ছিল বাংলার আবাস যোজনা) ইত্যাদি প্রকল্পের ক্ষেত্রে।

রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল গত এক বছর ধরে দফায় দফায় ঘুরে গিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে (যেখানে যেখানে তাঁরা ঘুরবেন) প্রকল্পের নাম কেন্দ্রের বিধি অনুযায়ী পাল্টানো হয়েছিল। কিন্তু আগামী দিনে হয়তো রাজ্য সর্বত্র সেই নাম ব্যবহার করবে স্বাভাবিক ভাবেই।”

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্যের তরফে যৌথ কমিটিতে কারা প্রতিনিধিত্ব করবেন, তা স্থির হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত স্থির রয়েছে, পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিত্ব থাকবে যৌথ কমিটিতে। থাকতে পারে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরও। দফতরের
সচিব সেই প্রতিনিধিত্ব করবেন। কেন্দ্রও সিনিয়র অফিসার পাঠাবে কমিটিতে। স্থির হয়েছে, অফিসারেরা ছাড়া কোনও জনপ্রতিনিধি থাকবেন না কমিটিতে।

পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কথায়, “সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ভাবে আলোচনা করার কারণে শুধুমাত্র অফিসারদের রাখা হচ্ছে কমিটিতে। এখনও বৈঠকের দিনক্ষণ স্থির হয়নি।”

মনে করা হচ্ছে, নতুন বছরেই বৈঠকের সূচি চূড়ান্ত হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement