বজবজে সিরাজুল ইসলামের (ইনসেটে) বাড়ির সামনে প্রতিবেশীদের ভিড়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ থানার বিড়লাপুর এলাকা থেকে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতে উত্তরপ্রদেশের মেরঠ শহরে গিয়েছিলেন তিনি। সেই শেখ সিরাজুল ইসলামের (২৭) মৃতদেহ মঙ্গলবার বিকেলে পৌঁছল বজবজ-মায়াপুরের বাড়িতে। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা গাঢ় হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সিরাজুল প্রায় ১০ বছর ধরে মেরঠের একটি মাদ্রাসায় পড়াচ্ছিলেন। ওই শহরের লিজারিগেট থানা থেকে ২৪ ডিসেম্বর সিরাজুলের অপমৃত্যুর খবর জানানো হয় নোদাখালি থানায়। লিজারিগেটের তদন্তকারীরা জানান, নিহতের দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। কাঁচি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত আক্রোশেই এই খুন। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আসার পরে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নোদাখালি থানার তরফে সিরাজুলের বাড়িতে খবর দেওয়ার পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। তার পরেই সাংসদের নির্দেশে ২৭ ডিসেম্বর বজবজ ১ নম্বর ব্লক সভাপতি শ্রীমন্ত বৈদ্য, সিরাজুলের ভাই শেখ হাফিজুল এবং নোদাখালি থানার দুই অফিসার মেরঠ রওনা হয়ে যান। ময়না-তদন্তের পরে, ২৯ ডিসেম্বর লিজারিগেট থানা থেকে মৃতদেহ নিয়ে বজবজ রওনা হন তাঁরা। পৌঁছন এ দিন বিকেলে।
সিরাজুলের বাবা-মা বছর পাঁচেক আগে মারা গিয়েছেন। তাঁরা তিন বোন, চার ভাই। হাফিজুল বলেন, ‘‘কিছু দিন ধরে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ চলছে। পুলিশের গুলি ও অত্যাচারে অনেকে মারা গিয়েছেন। সিরাজুলের মৃত্যু নিয়ে আমরা ধোঁয়াশায় আছি।’’ শ্রীমন্তবাবু বলেন, ‘‘আমরাও সিরাজুলের গায়ে একাধিক ক্ষতচিহ্ন দেখেছি। রাজ্য সরকারের তরফে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। নোদাখালি থানাও লিজারগেট থানার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’’ সিরাজুলের অন্য এক ভাই শেখ সফিজুল বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে অশান্তি শুরু হওয়ার পরে সিরাজুল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ওখানে ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। আতঙ্কের পরিবেশ। এখন কোনও ভাবেই বাড়ি ফেরা সম্ভব নয় বলে ভিডিয়ো কলে জানিয়েছিল ভাই।’’