বুথের-ভিতরে-বাইরে মিলিয়ে আধাসেনাই ছিল জনা চল্লিশ। —ফাইল চিত্র।
যেন দুর্গ!
কঠিন মুখে ঘুরছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সশস্ত্র জওয়ান। পাশে প্রচুর পুলিশ। তাঁদের পাশ কাটিয়ে মাছি গলার জো নেই! জালে আটকানোর মতো থমকাচ্ছেন মানুষ। অবধারিত প্রশ্ন, যাচ্ছেন কোথায়? বাড়ি কোথায়? ভোট দেবেন? সদুত্তর দিলে, তবেই ছাড়। হুগলির পান্ডুয়া স্টেশন থেকে শ’পাঁচেক মিটার দূরের স্কুলটিতে বাইরে-ভিতরে সোমবার ছিল এমনই নিরাপত্তা। কেন এই নজিরবিহীন নিরাপত্তা? নির্বাচন কমিশন কিছু বলতে চায়নি। তবে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাজির আধাসেনা ও পুলিশদের কাজে লাগানোর ফলেই এমন নিরাপত্তা।
ব্যালট পেপারে প্রার্থীদের নাম বিভ্রাটে গত শনিবার পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের সাতঘড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬২ নম্বর বুথে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সোমবার পুনর্নির্বাচন হল এমনই নজিরবিহীন নিরাপত্তায়। সকাল ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভোট হল নির্বিঘ্নে। বুথের-ভিতরে-বাইরে মিলিয়ে আধাসেনাই ছিল জনা চল্লিশ। পুলিশ তার চার গুণ। তাঁদের মধ্যে ইএফআর জওয়ানও ছিলেন। গ্রামের ভিতরে টহল দিল পুলিশ। নিরাপত্তার এই বহরের ছিটেফোঁটা শনিবার ভোটের দিন দেখা যায়নি হুগলি জেলার বহু বুথে। আধাসেনা ছিল কার্যত অদৃশ্য।
এ দিন পান্ডুয়ার বুথটিতে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ভোটারদের লাইন পড়ে। ৭টায় বিডিও (পান্ডুয়া) স্বাতী চক্রবর্তী আসেন। জেলা গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি (ক্রাইম) দেবীদয়াল কুণ্ডু, সিআই (মগরা) শ্যামল চক্রবর্তীও আসেন। এলাকার বাসিন্দা অলোক দে’র কথায়, ‘‘দু’শোর বেশি পুলিশ আনাগোনা করেছে গ্রামে। ভোটে এমন নিরাপত্তা, ভাবা যায় না। শান্তিতে ভোট হয়েছে।’’ স্থানীয় এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘নিরাপত্তা দেখে মনে হচ্ছিল, সারা পান্ডুয়ার ভোট বুঝি এখানেই হচ্ছে!’’
এই বুথে তৃণমূলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সিপিএমের। দলীয় কর্মীদের নিয়ে বুথ থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে ছিলেন এলাকার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন। তৃণমূল কর্মীরাও তাই। নিরাপত্তা নিয়ে কোনও দলের নেতাদের মুখেই কোনও অভিযোগ নেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বুথে মোট ভোটার ৮৪৭ জন। ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশ।