—নিজস্ব চিত্র।
খাবারের খোঁজে জঙ্গল ছেড়ে প্রায়ই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে হাতি। যার জেরে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হাতির দলের ‘উৎপাত’ বাড়ছে। হাতি-মানুষের এই সংঘাত এড়াতে এ বার উদ্যোগী হল বাঁকুড়ার বনবিভাগ। হাতিকে উত্তরবঙ্গের একটি বিশেষ ঘাস দিয়ে তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের কথা ভেবেছেনে বনাধিকারিকেরা।
উত্তরবঙ্গের চেপ্টি ঘাস হাতির অত্যন্ত প্রিয় খাবার। এই ঘাসের লোভ দেখিয়েই হাতিকে জঙ্গলের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় আটকে রাখতে চাইছে বন দফতর। সেই লক্ষ্যে বাঁকুড়ার সোনামুখী রেঞ্জের জঙ্গলে হাতির দলের যাতায়াতের করিডোরের মাঝে ১০ একর জায়গা চিহ্নিত করে একটি বিশেষ বন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বন দফতর জানিয়েছে, সেখানে প্রচুর পরিমাণে চেপ্টি ঘাসের চারা বসানো হয়েছে। হাতির স্বাদবদলের জন্য ওই বনে বসানো হচ্ছে আমা, কাঁঠাল, অর্জুন, কাঁচমালা-সহ বিভিন্ন গাছের চারাও। সোনামুখী রেঞ্জের আধিকারিক নীলয় রায় বলেন, ‘‘মূলত খাবারের খোঁজেই হাতির দল জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে হানা দেয়। জঙ্গলের মধ্যে সেই খাবার পেয়ে গেলে হাতির দল জঙ্গলের বাইরে যাবে না। সেই কারণে জঙ্গলের ভিতরে প্রায় দশ একর জায়গা জুড়ে চেপ্টি ঘাস-সহ হাতির প্রিয় অন্যান্য গাছের চারা বসানো হচ্ছে। আশা করি, এই বন তৈরি হলে হাতি-মানুষের সংঘাতও কমবে।’’
বাঁকুড়ায় হাতির সমস্যা নতুন নয়। গত কয়েক দশক ধরে ঝাড়খণ্ডের দলমা পাহাড় থেকে শ’য়ে শ’য়ে বুনো হাতির দল প্রতি বছর খাবারের খোঁজে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সীমানা পেরিয়ে বাঁকুড়ায় হাজির হয়। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, জয়পুর, পাত্রসায়ের, সোনামুখী, বড়জোড়া ও গঙ্গাজলঘাটি ব্লকে ছড়িয়ে থাকা বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে বছরের একটা বড় সময় ধরে দাপিয়ে বেড়ায় হাতির দল। জেলার এক জঙ্গল থেকে আর এক জঙ্গলে যাওয়ার পথে হাতির দলের হানায় ব্যপক ক্ষতি হয় ফসলের। মাঝে মধ্যেই হাতির দল খাবারের খোঁজে জঙ্গল ছাড়িয়ে লোকালয়েও হানা। ফলে ফসল ও সম্পত্তিহানির পাশাপাশি প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে। সম্প্রতি হাতি-মানুষের সংঘাতের জেরে ঝাড়গ্রামে একটি হাতির মৃত্যুর পর আরও সতর্ক বন দফতর।