—ফাইল চিত্র।
যাত্রী টানতে দিঘাগামী দু’টি ট্রেনের টিকিটে ছাড়ের ঘোষণা করল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। হাওড়া-দিঘা সুপার ফাস্ট এসি এক্সপ্রেস এবং দিঘা-হাওড়া কান্ডারি এক্সপ্রেসে আগামী ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বাতানুকূল শ্রেণিতে মূল ভাড়ার উপরে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে ছাড় মিলবে।
বছরভর ওই দু’টি ট্রেনে যাত্রী কেমন থাকে তা বিশ্লেষণ করেই ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো বাতানূকূল ট্রেনেও যে সব রুটে যাত্রী কম হয়, সেখানে ভাড়ায় ছাড় দিয়ে যাত্রী টানার চেষ্টায় সাফল্য মিলেছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘পর্যটন মরসুমে বাতানুকূল শ্রেণিতে যাত্রী টানতেই ভাড়ায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে।’’
রেল সূত্রে খবর, সুপার ফাস্ট এসি এক্সপ্রেসের আপ এবং ডাউন দু’টি ট্রেনেই এবং কান্ডারি এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রে দিঘা থেকে হাওড়া ফেরার পথে ওই ছাড় মিলবে। এসি সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসে হাওড়া থেকে দিঘাগামী ট্রেনে ডিসেম্বর জুড়ে শুক্র এবং শনিবার ছাড়া সব দিন এগ্জিকিউটিভ চেয়ার কারে টিকিটের মূল ভাড়ার উপরে ২০ শতাংশ ছাড় মিলবে। ফিরতি পথে দিঘা থেকে হাওড়া আসার সময় সব দিনই মিলবে ওই ছাড়। তবে ওই ট্রেনে বাতানুকূল চেয়ার কারে কোনও ছাড় মিলছে না।
আরও পড়ুন: টাস্ক ফোর্স গড়েও মাছ উৎপাদনে পিছিয়ে বঙ্গ
জানুয়ারিতে অবশ্য এগ্জিকিউটিভ চেয়ার কারে দিঘা যাওয়ার সময় সপ্তাহের সাত দিনই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ফেরার ট্রেনে রবিবার বাদে অন্য দিন ছাড় দেওয়া হচ্ছে। বাতানুকূল চেয়ার কারে দিঘা যাওয়ার ক্ষেত্রে শুক্রবার এবং ফেরার ক্ষেত্রে রবিবার ছাড়া অন্য দিন মূল ভাড়ার উপরে ১৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে রেল। ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষার মরসুম
শুরু হওয়াতে ওই সময় পর্যটকদের সংখ্যা অনেকটা কমে আসে। ওই সময়ে দুটি শ্রেণিতেই হাওড়া থেকে দিঘা যাওয়ার ট্রেনে যথাক্রমে ২০ এবং ১৫ শতাংশ হারে ছাড় মিলবে। দিঘা থেকে ফেরার ট্রেনে অবশ্য রবিবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন ছাড় মিলবে। মার্চে এগ্জিকিউটিভ শ্রেণিতে দিঘা যাওয়ার ক্ষেত্রে শুক্রবার এবং হাওড়ায় ফেরার ক্ষেত্রে রবিবার বাদে সপ্তাহের অন্য দিন ছাড় মিলবে। তবে বাতানুকূল শ্রেণিতে ওই মাসে ছাড় থাকছে না।
দিঘা-হাওড়া কান্ডারি এক্সপ্রেসে হাওড়া ফেরার ট্রেনে ডিসেম্বর থেকে ফ্রেব্রুযারি বাতানুকূল চেয়ার কারে রবিবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য দিন টিকিটে মূল ভাড়ায় ১৫ শতাংশ হারে ছাড় মিলবে। মার্চে কোনও ছাড় থাকছে না। আর এই ট্রেনে এগ্জিকিউটিভ চেয়ার কার নেই।
সপ্তাহ শেষের ছুটিতে বাঙালির প্রিয় গন্তব্য দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর বা তাজপুর। আর শীতের মরসুমে তো সব সময়ই ভিড় লেগে থাকে এই সব সৈকত পর্যটন কেন্দ্রে। দিঘা স্টেশনকে ইতিমধ্যে পরিবেশবান্ধব হিসেবেও গড়ে তোলা হয়েছে। তার উপর ট্রেনের ভাড়ায় ছাড় আরও পর্যটক টানবে বলেই মনে করা হচ্ছে। রেলের এই সিদ্ধান্তে খুশি পর্যটক থেকে হোটেল ব্যবসায়ীরাও। উত্তর ২৪ পরগনার ঈশ্বরীগাছা থেকে দিঘায় আসা পিন্টু হাজরা বলেন, ‘‘সড়কপথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি। জাতীয় সড়কের হালও খুব একটা ভাল নয়। রেলের ভাড়ায় ছাড় মিললে খুবই সুবিধা হবে।’’ দিঘার হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তীর মতে, ‘‘রেল এ রকম ছাড় দিলে পর্যটন মরসুমে আরও ভাল ব্যবসা হবে বলেই আশা করছি।’’