TMC MLA Oath Controversy

‘বিধানসভায় এসে শপথ সমস্যা মেটান’, রাষ্ট্রপতির পর এ বার রাজ্যপালকেও চিঠি দিলেন স্পিকার বিমান

বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার বিধায়ক রায়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ ২১:৫৯
Share:

(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বিধানসভায় এসে রাজ্যপালই দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যা মিটিয়ে দিন, চিঠি লিখে অনুরোধ করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে বৃহস্পতিবারই তিনি এ বিষয়ে চিঠি লিখেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে। একই দিনে চিঠি লিখে সমস্যা মেটানোর অনুরোধ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছেও। তবে রাজ্যপাল এখন কলকাতায় নেই। তিনি দিল্লি গিয়েছেন। তাঁর কলকাতায় না ফেরা পর্যন্ত শপথগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা মেটার সম্ভাবনা নেই বলেই মত অনেকের।

Advertisement

বরাহনগরের উপনির্বাচনে জয়ী প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার উপনির্বাচনে জয়ী প্রার্থী রায়াত হোসেন সরকার বিধায়ক হিসাবে এখনও শপথগ্রহণ করতে পারেননি। নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যপাল জয়ী প্রার্থীদের শপথগ্রহণ করান। কিন্তু দুই বিধায়কই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা শপথ নিতে রাজভবনে যাবেন না। তাই জটিলতা তৈরি হয়েছে। সায়ন্তিকাদের বক্তব্য, রাজ্যপালকে বিধানসভায় এসে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করাতে হবে। অথবা, স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারকেও শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিতে পারেন রাজ্যপাল। কোনওটিতেই রাজি হননি বোস। তাই বিধানসভায় ধর্নায় বসেছেন দুই বিধায়ক।

এই পরিস্থিতিতে সমস্যা মেটাতে রাষ্ট্রপতি মুর্মুর দ্বারস্থ হয়েছেন স্পিকার বিমান। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতিকে সাত পাতার একটি চিঠিতে ‘নালিশ’ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, বাংলার রাজ্যপাল হবু বিধায়কদের শপথগ্রহণের মতো একটি বিষয় নিয়ে ‘একবগ্গা’ আচরণ করছেন। যা সুস্থ গণতন্ত্রের পরিপন্থী। একই সঙ্গে বিমান জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।

Advertisement

এর পর বৃহস্পতিবার রাতেই রাজ্যপালকে চিঠি পাঠান বিমান। বিধানসভা সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে রাজ্যপালকে বিধানসভায় আসতে অনুরোধ করেছেন তিনি। চিঠিতে তিনি বলেছেন, শপথগ্রহণ নিয়ে আর জটিলতার মধ্যে না যাওয়াই ভাল। তাঁর অনুরোধ, রাজ্যপালই যেন বিধানসভায় এসে দুই প্রার্থীকে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে যান। তা হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

শপথগ্রহণ না করা পর্যন্ত বিধানসভায় সংবিধানের প্রণেতা অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে ধর্না জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন সায়ন্তিকারা। রাজভবনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে তাঁরা অনড়। বৃহস্পতিবারও সায়ন্তিকা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে তাঁদের যেতে নিষেধ করেছেন। তাই কোনও ভাবেই তাঁরা সেখানে যাবেন না। অন্য যে কোনও জায়গায় তাঁরা শপথগ্রহণে রাজি আছেন।

বিধায়কদের শপথগ্রহণ নিয়ে বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘জেতার পরেও এক মাস ধরে আমার বিধায়কেরা বসে আছেন! রাজ্যপাল শপথ নিতে দিচ্ছেন না। মানুষ ওঁদের নির্বাচিত করেছে। ওঁর কী অধিকার তাঁদের শপথ নিতে না দেওয়ার? উনি হয় স্পিকারকে এই অধিকার (শপথগ্রহণ করানোর) দিন, নয়তো ডেপুটি স্পিকারকে দিন। আর তা না হলে নিজে বিধানসভায় যান। ওঁর রাজভবনে কেন সকলে যাবে?’’ এর পরেই সাম্প্রতিক অতীতে রাজভবনে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনার অভিযোগের দিকে ইঙ্গিত করে মমতা বলেন, ‘‘রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে বলে আমার কাছে অভিযোগ করেছে।’’

উল্লেখ্য, রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী কিছু দিন আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন। রাজ্যপাল সংবিধানের রক্ষাকবচ পান। তাই সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা যায়নি। কিন্তু মমতা আগেই বলে দিয়েছিলেন, তিনি রাজভবনে যাবেন না। সেখানকার নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর বিধায়কদের শপথগ্রহণের সমস্যাতেও মূল কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই নিরাপত্তা প্রসঙ্গ। এখন দেখার, রাজ্যপাল দিল্লি থেকে ফিরলে কোন পথে এই সমস্যার সুরাহা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement