ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী নাশকতা। —ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়ে ফের ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণে মৃত্যু হল এক জওয়ানের। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুর জেলায়। সেখানে তয়নার এবং ফরসেগড় গ্রামের মাঝে একটি সড়ক নির্মাণের কাজ চলছিল। ওই কাজে পাহারা দেওয়ার জন্য মোতায়েন ছিলেন ছত্তীসগঢ় সশস্ত্র বাহিনী (সিএএফ)-র জওয়ানেরা। ওই সময়েই মাওবাদীদের পেতে রাখা আইইডি ফেটে মৃত্যু হয় বাহিনীর এক জওয়ানের। কয়েক সপ্তাহ আগেই মাওবাদীরা শান্তিপ্রস্তাব দিয়ে বিবৃতি জারি করেছিল। তবে এরই মধ্যে নাশকতাও চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
মৃত জওয়ানের নান মনোজ পূজারি (২৬)। তিনি সিএএফ-এর ১৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। সড়ক নির্মাণের কাজে পাহারা দেওয়ার সময় অসাবধানতায় একটি আইইডি বিস্ফোরকের উপর পা ফেলে দেন তিনি। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই জওয়ানের। ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের জঙ্গল এলাকায় রাস্তার আশপাশে আগেও বিভিন্ন সময়ে বিস্ফোরক পুঁতে রাখার ঘটনা ঘটেছে। মাঝে মধ্যে সাধারণ মানুষও এই বিস্ফোরকের ফাঁদে পড়েন। এর আগে গত ৯ এপ্রিল ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরে আইইডি বিস্ফোরণে কেন্দ্রীয় বাহিনী (সিআরপিএফ)-র এক জওয়ান জখম হয়েছিলেন। তার আগে গত ৪ এপ্রিল নারায়ণপুর জেলায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ২৫ বছর বয়সি এক তরুণের। ৩০ মার্চ বিজাপুরে আইইডি বিস্ফোরণে ৪০ বছর বয়সি এক আদিবাসী মহিলা প্রাণ হারিয়েছিলেন।
বস্তুত, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে নকশাল-সমস্যা নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই ভাবনার কথা সম্প্রতি বিভিন্ন সময়ে প্রতিফলিত হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথা। সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ে গিয়ে বক্তৃতার সময়েও সে কথা জানান শাহ। মাওবাদীদের অস্ত্রসমর্পণ করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। কেউ আত্মসমর্পণ করলে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার তাঁকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেবে বলেও আশ্বাস দেন শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই প্রস্তাবের আগে এবং পরে অনেক মাওবাদীই অস্ত্রসমর্পণ করেছেন। মাওবাদীদের তরফে সম্প্রতি শান্তিপ্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। তার পরে গত ১৭ এপ্রিল মাওবাদীদের ‘উত্তর-পশ্চিম সাব জ়োনাল ব্যুরো’ একটি বিবৃতি জারি করে ছত্তীসগঢ়ে এক মাসের যুদ্ধবিরতিরও প্রস্তাব দেয়। এরই মধ্যে ফের মাওবাদীদের পেতে রাখা আইইডি ফেটে মৃত্যু হল এক জওয়ানের।