Biman Banerjee

দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ স্পিকার বিমানের, চাইলেন রাজ্যের প্রকল্পের বকেয়া অর্থ

গত বৃহস্পতিবার পি২০ স্পিকার সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন বিমান। সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ফগ্গন সিং কুলস্তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:০৪
Share:

বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে রয়েছে দীর্ঘ দিন। তাই এ বার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাজ্যের দাবিদাওয়া আদায়ের পক্ষে সরব হলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তা-ও আবার রাজধানী দিল্লিতে। গত বৃহস্পতিবার পি২০ স্পিকার সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন তিনি। দিল্লি পৌঁছেই সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি খোঁজখবর নিতে শুরু করেন সেই সময় দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ রয়েছেন কি না। মন্ত্রী দিল্লিতে থাকলে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করবেন বলেও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন বিমান। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন গিরিরাজ এই মুহূর্তে দিল্লিতে নেই, নেই ওই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিও। দিল্লিতে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আধিকারিকদের থেকে স্পিকার জানতে পারেন, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আরও এক জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। তিনি মধ্যপ্রদেশের মণ্ডল লোকসভার সাংসদ ফগ্গন সিং কুলস্তে। চাইলে তাঁর সঙ্গে দেখা করার বন্দোবস্ত হতে পারে।

Advertisement

দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দফতর সূত্রে খবর, স্পিকার জানিয়ে দেন তিনি পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক বঞ্চনার কথা বলতে চান কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে। এ ক্ষেত্রে যদি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কোনও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হয়, তাতে তাঁর সম্মতি রয়েছে। স্পিকারের সম্মতি পাওয়ার পরেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আধিকারিকেরা যোগাযোগ শুরু করেন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে। দিল্লির কৃষি ভবনে প্রতিমন্ত্রী ফগ্গন সিংহ সময় দেন সাক্ষাতের। যথা সময়ে স্পিকার পৌঁছে যান তাঁর দফতরে। সেখানেই দীর্ঘক্ষণ রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা-সহ ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ নিয়ে কথা হয় দু’জনের মধ্যে। সূত্রের খবর, বৈঠকে তাঁর দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন কুলস্তে। চলতি মাসের ৩ তারিখ কৃষি ভবনে গিয়ে গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনের দেখা পাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ ছিল, সাক্ষাৎ না করে পিছনে দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। পাল্টা স্বাধ্বী নিরঞ্জন কলকাতা এসে দাবি করেন, তিনি আলোচনার জন্য সময় দিলেও, সদিচ্ছার অভাব ছিল তৃণমূলের। আর সেই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই স্পিকার বিমান সাক্ষাৎ করলেন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আরও এক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে।

১০০ দিনের কাজ-সহ কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ আটকে রেখেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এমনটাই অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের সরকার তথা শাসকদল তৃণমূলের। প্রতিবাদ জানিয়ে অক্টোবর মাসের ২ এবং ৩ তারিখে দিল্লিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে তারা। এমনকি বকেয়া পাওনার দাবিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজভবনের বাইরে বসেছিল পাঁচ দিনের ধর্না। সেই সময় রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের থেকে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের এবং রাজ্যের পাওনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি রিপোর্ট নিয়েছিলেন স্পিকার। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের দাবি নিয়ে সরব হন তিনি। প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে বিমান বলেন, “রাজ্যের গরিব মানুষের টাকা এ ভাবে আটকে রেখে কেন্দ্রীয় সরকার সঠিক কাজ করছেন না। ১০০ দিনের কাজে গ্রামের কত জন গরিব মানুষ নির্ভরশীল তার গ্রামে না গেলে বোঝা যায় না। তাই আমি রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের যে বঞ্চনা এবং ন্যায্য প্রাপ্য অধিকার রয়েছে, সেই বিষয়েই মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।” তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তা-ও গরিব মানুষের প্রাপ্য টাকা এখনও দেওয়া হয়নি রাজ্যকে। এ ভাবে মানুষের অধিকার থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।” উল্লেখ্য, গত প্রায় ২ বছর ধরে একাধিক খাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলার শাসকদল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement