BJP

দিল্লি-যাত্রা বাতিল করলেন শোভন, কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা

প্রায় এক বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সক্রিয় ভাবে মাঠে নামেননি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ২২:০৯
Share:

বিজেপির বৈঠকে যোগ দিতে আপাতত দিল্লি যাচ্ছেন না শোভন চট্টোপাধ্যায়।

স্থির হয়েছিল ২৭ জুলাই শোভন চট্টোপাধ্যায় যোগ দেবেন দিল্লির বৈঠকে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেই ওই তারিখ স্থির হয়েছিল বলে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন। কিন্তু ফের সিদ্ধান্ত বদলেছে কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের। শোভন আপাতত দিল্লি যাচ্ছেন না বলে জানা গিয়েছে। দিল্লিতে যে বৈঠক চলছে, তাতে যোগ দেওয়ার ‘উপযুক্ত’ শোভনবাবু নন— বৃহস্পতিবার বলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সে মন্তব্যের রাত পোহাতে না পোহাতেই খবর, দিল্লি যাচ্ছেন না শোভন। তবে দিলীপ ঘোষ কী বলেছেন, তা নিয়ে তাঁরা ভাবিত নন বলে মন্তব্য করেছে শোভন শিবির।

Advertisement

প্রায় এক বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সক্রিয় ভাবে মাঠে নামেননি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোমালিন্যের জেরেই তাঁরা দূরে সরে ছিলেন বলে জল্পনা ছিল। সে মনোমালিন্য শেষ পর্যন্ত শোভনকে তৃণমূলে ফেরাতে পারে, এমন গুঞ্জনও একাধিক বার তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শোভন-বৈশাখী তৃণমূলে ফেরেননি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও নিরন্তর যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছিলেন তাঁদের সঙ্গে। বুধবার খবর এসেছিল যে, বরফ গলেছে, দীর্ঘ নিষ্ক্রিয়তা কাটিয়ে মাঠে নামছেন শোভন। সংগঠন, নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং অন্য কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লিতে যে সপ্তাহব্যাপী বৈঠক ডেকেছেন বিজেপি নেতৃত্ব, সে বৈঠকে শোভন যোগ দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছিল।

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার জানিয়েছিলেন যে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শোভনকে বৈঠকে যোগ দিতে অনুরোধ করেছেন। ২৩ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে যে কোনও এক দিন তিনি বৈঠকে সামিল হবেন বলেও বৈশাখী সে দিন জানান। বৃহস্পতিবার স্থির হয়, শোভনের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্ব বৈঠক করবেন ২৭ তারিখ। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটি বয়ান সামনে আসে। তিনি বলেন, ‘‘শোভনবাবুর সঙ্গে কথা হয়নি। তাই আমার কিছু জানা নেই। জানি না কে তাঁকে কোন বৈঠকের জন্য ডেকেছেন। এই বৈঠকের জন্য তিনি উপযুক্ত নন। তাই তাঁকে ডাকাও হয়নি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রথম দিনেই তপ্ত বাদানুবাদ! তার জেরেই বৈঠক ছেড়ে ফিরে এলেন মুকুল?

দিলীপের এই মন্তব্যের পরেই পরিস্থিতি ফের ঘুরে গিয়েছে বলে শোভন শিবিরের দাবি। শোভন চট্টোপাধ্যায় ২৭ জুলাই দিল্লি যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল। তা হলে কি বিজেপির দিক থেকে ফের মুখ ফিরিয়ে নিলেন শোভনরা? তেমন কোনও মন্তব্য অবশ্য শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তরফ থেকে আসেনি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আমন্ত্রণ শোভন পেয়েছেন বলে যিনি জানিয়েছিলেন, সেই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যেও ওই রকম কোনও ইঙ্গিত নেই। তবে ২৭ জুলাই শোভন চট্টোপাধ্যায় যে দিল্লি যাচ্ছেন না, সে কথা শুক্রবার বৈশাখী স্পষ্টই জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: রাজ্যে লকডাউন ২৫ ও ২৯ জুলাই, বন্ধ থাকবে কলকাতার উড়ান পরিষেবাও

আচমকা এই মত বদল কেন? দিলীপ ঘোষের মন্তব্যই কি এর কারণ? শোভন ঘনিষ্ঠদের অনেকে তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন এ দিন। তবে বৈশাখী সরাসরি সে কথা এ দিন বলতে চাননি। তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আমন্ত্রণ যে অত্যন্ত আন্তরিক, সে কথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। তাঁরা যথেষ্ট সম্মান দিয়েই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ডেকেছিলেন। তাঁদের কথাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যের কোন নেতা কী বললেন, শুনিনি। সে সব কথার খুব একটা গুরুত্বও আমাদের কাছে নেই।’’

রাজ্যের কোনও নেতার কথা যদি গুরুত্বপূর্ণ না-ই হবে, তা হলে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মহল থেকেই কেন ইঙ্গিত আসছে যে, দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে অসন্তুষ্ট হয়েই তিনি দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করলেন? দিলীপ ঘোষের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে ঘুরিয়ে দাবি করছেন বৈশাখীও। তা হলে শোভন বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না কেন? বৈশাখীর জবাব, ‘‘বৈঠকে তিনি কিছুতেই যোগ দেবেন না, এমন কথা এখনও বলছি না। খুব প্রয়োজন যদি হয়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ খোলা। ভার্চুয়াল বৈঠকের বিষয়েও তো কথা হচ্ছিল। সুতরাং সে পথও খোলা রয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement