শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং দিলীপ ঘোষ।
এ বার কি বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতে উদ্যোগী হলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়? বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ শনিবার দাবি করেন, ‘‘শোভনবাবু আমাকে ফোন করেছিলেন। বলেছেন, বিনা কারণে তাঁদের নিয়ে কোনও বিতর্ক তৈরি হওয়া উচিত নয়। আমি বলেছি, অবশ্যই উচিত নয়। দলের তরফে যাতে এ রকম কথা কেউ না বলেন, সেটা আমি দেখব।’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল, শোভন নিজেই দিলীপবাবুকে ফোন করে কথা বলেছেন। এত দিন এ সব কাজে অগ্রণী ভূমিকা থাকত তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের। বিজেপিতে যোগদানের পর রাজ্য দফতরে প্রথম এসে শোভন বলেছিলেন, ‘‘দিলীপবাবুর কাছে আমার ফোন নম্বরও নেই।’’
কলকাতার আইসিসিআর-এ শনিবার বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক হয়। সেখানে অবশ্য শোভনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘শুধু শোভনবাবু কেন, অনেককেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটা পুরোপুরি সাংগঠনিক বৈঠক ছিল। শোভনবাবু দলে এলেও এখনও সংগঠনের সঙ্গে মিশে যাননি। নতুন আসা সকলকেই ধীরে ধীরে তাঁদের রুচি এবং যোগ্যতা অনুযায়ী দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’
শোভনের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য তাঁকে এবং বৈশাখীকে ফোন ও মেসেজ করা হলেও কোনও জবাব আসেনি। এর আগে আইসিসিআর-এ বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন সংক্রান্ত আর একটি বৈঠকেও শোভন যাননি। বিজেপি নেতৃত্ব প্রথমে দাবি করেছিলেন, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পরে জানা যায়, শোভনকে আমন্ত্রণ জানাতে ভুলে গিয়েছিলেন বিজেপির নেতারা।
বিজেপির এ দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত— বিধানসভা ভোটের দু’বছর আগেই কেন্দ্রপিছু দায়িত্ব বণ্টন এবং প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দেওয়া হবে। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রদেশ স্তরের নেতাদের মধ্যে ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এখন থেকেই প্রার্থী বাছাই শুরু করে দিতে।’’ রাজ্যের ১৭টি পুরসভার মেয়াদ ফুরোলেও ভোট হয়নি। সেগুলির ভোটের বিষয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। দিলীপবাবু জানান, ওই পুরসভাগুলির ভোটের প্রার্থী থেকে শুরু করে অন্য়ান্য খুঁটিনাটি ঠিক করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা নেতৃত্ব।
এ দিনের বৈঠকে দিলীপবাবু জানান, কর্মীদের মধ্যে আগামী বিধানসভা ভোটে জয়ের আত্মবিশ্বাস তৈরি করতেই তিনি এক কোটি সদস্যের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমাদের সামনে প্রথমে ৫০ লাখ এবং পরে ৬০ লাখ সদস্যের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি বলেছিলাম, আমাদের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন করা। আর এক কোটি সদস্য না হলে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জেতার মতো আত্মবিশ্বাস আমরা বুকের মধ্যে জাগাতে পারব না। তাই ওই লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলাম।’’