শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং মদন মিত্র। —ফাইল চিত্র ।
নারদ মামলায় হাজিরা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং মদন মিত্র। সোমবার নগর দায়রা আদালতে তাঁরা হাজিরা দেন। আদালতে হাজিরা দিয়ে বেরোনোর সময় লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ফলাফল নিয়ে মতপ্রকাশ করতে শোনা যায় শোভনকে। বিভিন্ন পুরসভায় তৃণমূলের ফলাফল খারাপ হওয়া নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা, বিধানসভা, পুরসভা, পঞ্চায়েত— সব নির্বাচন আলাদা। সব নির্বাচনের হিসাব আলাদা। শেষমেশ দেখতে হয় মানুষ কী রায় দিয়েছে।’’
উল্লেখ্য, সোমবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন নারদ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত আইপিএস অফিসার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার আইনজীবী শ্যামল ঘোষ। আদালতে শ্যামল জানান, কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মির্জা অভিযুক্ত। তাই তাঁর মক্কেলকে ভুগতে হচ্ছে। কিন্তু এই মামলায় বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী তদন্ত হচ্ছে এবং কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের বিরুদ্ধেই বা কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলেন মির্জার আইনজীবী। এর পরে বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ভাবে তদন্ত এগোচ্ছে, তা ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান বিচারক। এর জবাবে ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জানান, তদন্ত কী পর্যায়ে রয়েছে সে বিষয়ে জেনে তার পরেই বলা সম্ভব। হাই কোর্টে মামলাটি বিচারাধীন বলেও তিনি জানান। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে অভিজিৎ বলেন, ‘‘অভিযুক্তের আইনজীবী বলছেন যে, তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে। ইডি বাকিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা বলার জায়গা এটা নয়। হাই কোর্টে মামলা চলছে। উনি চাইলে সেখানে গিয়ে নিজের বক্তব্য জানাতে পারেন।’’
অন্য দিকে, মির্জার আইনজীবী বলেন, ‘‘আমার মক্কেল এক জন আইপিএস অফিসার। তাঁকে কেন এই মামলায় অভিযুক্ত করা হল, তা আমি সিবিআই এবং ইডির কাছে বার বার জানতে চেয়েছি। কেন শুধু পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করলেন, বাকি যে ১২ জন অভিযুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন মামলা রুজু করা হল না? অর্থ তছরুপ মামলায় তাঁর যোগ এখনও প্রমাণ করা যায়নি। মুকুল রায় যদি অব্যাহতি পেয়ে যান, তা হলে কেন মির্জা পাবেন না? এ সব আদালতে জানতে চাইব না তো কোথায় জানতে চাইব?’’
নারদ মামলায় নাম জড়িয়েছিল মির্জার। সেই সময় বর্ধমানের পুলিশ সুপার ছিলেন তিনি। এই কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় সাসপেন্ড করা হয়েছিল ওই পুলিশকর্তাকে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মির্জাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ৫০ দিনের বেশি জেল হেফাজতে ছিলেন তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পান।
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে প্রকাশ্যে আসে নারদকাণ্ড। নারদের তোলা গোপন ভিডিয়োয় (যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) তৃণমূলের নেতা-নেত্রী-পুলিশ অফিসারদের টাকা নিতে দেখা যায়। নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল মির্জাকেও। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।