কোলাঘাটের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
কোলাঘাটে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণে উড়ে গেল আস্ত বাড়ি। এই ঘটনায় আশপাশের আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও এখনও কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। রবিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার পয়াগ গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাড়িটিতে অবৈধ বাজি কারখানা ছিল। বিস্ফোরণের জেরে গোটা বাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, আশপাশেরও বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল ধরে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ২টি ইঞ্জিন। দীর্ঘ সময়ের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৯ জনের। সেই ঘটনার এক বছরের মাথায় আবার পূর্ব মেদিনীপুরের বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। খাদিকুলের বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, সেই ঘটনার এক বছর কাটতে না কাটতেই আবারও বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ পয়াগ গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ মাইতির বাড়িতে বিস্ফোরণের আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। মুহূর্তে আগুনের গ্রাসে চলে যায় গোটা বাড়ি। পরিবারের সদস্যেরা দ্রুত বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কোলাঘাট থানার পুলিশ এবং দমকল। স্থানীয়েরাও আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যে জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল সেই বাড়িটি পুরোপুরি ভগ্নস্তুপে পরিণত হয়েছে। ফাটল ধরেছে আশপাশের আরও কয়েকটি বাড়িতে।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, কোলাঘাট থানার পয়াগ গ্রামে একাধিক অবৈধ বাজি কারখানা রয়েছে। এবং বছরের পর বছর ধরে রমরমিয়ে চলছিল বাজির ব্যবসা। প্রশাসনের একাংশের মদতেই এই অবৈধ বাজির কারবারিরা ওই এলাকায় জাঁকিয়ে বসে ব্যবসা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ। পড়শি পাঁশকুড়া থানা এলাকাতেও বেশ কিছু বাজি কারখানা প্রশাসনের নাকের ডগায় এ ভাবেই চলছে বলেও স্থানীয়দের দাবি। যদিও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতি বছর একাধিক বার অবৈধ বাজি কারখানাগুলিতে অভিযান চালানো হয়। তার পরেও লুকিয়ে-চুরিয়ে এই বাজি কারখানাগুলি চালানো হচ্ছে।