আগামী ১৮ মার্চ থেকে রাজ্য সরকারকে ডিজিটাল মাধ্যমে আর সহযোগিতা করবেন না প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক এবং সরকারি কর্মীরা। — ফাইল ছবি।
ডিএ (মহার্ঘ ভাতা) মামলা এখনও ঝুলছে সুপ্রিম কোর্টে। এর মধ্যেই সরকারি কর্মীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ‘ডিজিটাল অসহযোগিতা’-র পথে হাঁটল। আগামী ১৮ মার্চ থেকে রাজ্য সরকারকে ডিজিটাল মাধ্যমে আর সহযোগিতা করবেন না প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক এবং সরকারি কর্মীরা। ব্যক্তিগত ফোনে সরকারি কাজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ শুনবেন না।
ডিএ-র দাবিতে গত ১০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল সরকারি কর্মীদের সংগঠন। এ বার তাদের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ধর্মঘটের থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে ডিজিটাল অসহযোগিতার পথে হাঁটতে চলেছে তারা। সরকারি কর্মীরা ১৮ তারিখ থেকে সরকারি সমস্ত হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যাবেন। সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টে ৩০ মিনিট পর্যন্ত কাজের সময়। ওই সময়ের আগে এবং পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ গ্রহণ করবেন না। ছুটির দিন দফতরের কাজ করবেন না। অফিসের বাইরে অনলাইন মিটিং করবেন না। ব্যক্তিগত ফোন, কম্পিউটার, ডেটা ব্যবহার করে অফিসের কোনও কাজ করবেন না।
অসহযোগিতার পথে হাঁটবেন সংগঠনের সদস্য প্রাথমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তাঁরাও একই ভাবে ১৮ তারিখের পর থেকে ব্যক্তিগত মোবাইল, ডেটা বা কম্পিউটার ব্যবহার করে অফিসের কাজ করবেন না। প্রাথমিক স্কুলে এ বার থেকে শিক্ষকরা ডিজিটাল কোনও কাজ করবেন না। ওই কাজের জন্য আলাদা কর্মী নিয়োগের কথাও বলেছে সংগঠন। যদিও সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের এই পদক্ষেপের ফলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কোনও প্রভাব পড়বে না। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষকেরা থাকবেন। পরীক্ষা শেষে খাতা স্কুল থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র ফারাক হয়েছে ৩২ শতাংশ। ২০২২ সালের মে মাসে কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। তাদের যুক্তি, হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা খরচ হবে। যা রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা কঠিন। রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের (কনফেডারেশন) আইনজীবী দাবি করেন, বকেয়া ডিএ দিতে হলে রাজ্যের উপর বিশাল অঙ্কের আর্থিক বোঝা চাপবে, এ কথা ঠিক। আবার এ-ও ঠিক যে, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য অধিকার। তা থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টে সেই শুনানি বার বার পিছিয়ে গিয়েছে। আগামী শুনানি ২১ মার্চ। এর মধ্যেই ডিএর দাবিতে শহিদ মিনারের পাদদেশে আন্দোলন করছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। গত শুক্রবার ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা। এ বার তারা আরও কড়া পথে হাঁটল।