দুপুর দেড়টা থেকে দু’টোর মধ্যে মধ্যাহ্নভোজেনের সময়ে অন্য কোনও কর্মসূচি পালন করা যাবে না, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে নবান্ন। প্রতীকী ছবি।
মধ্যাহ্নভোজনের বিরতিতে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার আদেশনামা নিয়ে মামলা করার হুমকি দিল সরকারি কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠন।
গত ২০ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নবান্ন জানায়, দুপুর দেড়টা থেকে দু’টোর মধ্যে মধ্যাহ্নভোজেনের সময়ে অন্য কোনও কর্মসূচি পালন করা যাবে না। ১৯৮৪ এবং ১৯৯২ সালে বাম সরকারের সময়ের দু’টি নির্দেশিকারও উল্লেখ করে নবান্ন। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন কর্মচারী সংগঠনগুলির নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ১৯৮৪ সালের আদেশনামায় সরকার জানিয়েছিল, আধঘণ্টার মধ্যাহ্নভোজের বিরতি (তখন ছিল দুপুর দু’টো থেকে আড়াইটে) অনেক সময়ে অন্য কাজে ব্যবহার হয়। সরকার জানায়, প্রাথমিক ভাবে ওই বিরতি টিফিন খাওয়ার জন্য। তবে ওই বিরতির সময়ে জরুরি কোনও সভা, কর্মসূচি করতে হলে, সেই সময়ে যাঁরা কাজ করছেন, স্লোগান বা বিক্ষোভের প্রভাব তাঁদের উপর পড়লে চলবে না। অন্য সময়েও এমন কর্মসূচি পালন যে করা যাবে না, তা-ও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯২ সালের আদেশনামায় হাজিরার সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। টিফিন বিরতির সময় বদলে হয় দুপুর দেড়টা থেকে দু’টো পর্যন্ত।
এ বিষয়ে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী বলেন, “ভুল ভাবে ওই আদেশনামার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই আদেশনামা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাব।” কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “বাম আমলে টিফিন বিরতিতে অন্যান্য কর্মসূচির ছাড় ছিল। এখন কর্মচারীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, “সুচতুর ভাবে প্রতিটি দফতরে কর্মীদের সংগঠন করার ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বদলিকে একটা শাস্তির ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহার করছে এই সরকার। কো-অর্ডিনেশন কমিটি নবান্নে ডিএ-র দাবিতে মিছিল করেছিল, পত্রপাঠ ১৫ জন নেতাকে বদলি করা হয়েছিল।’’
সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে শাসক দলের সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার দাবি, ‘‘এই সব প্রতিবাদের পিছনে মূলত আছে সিপিএম। ডিএ-সহ কিছু দাবি নিয়ে সরকারি কর্মীদের একাংশ ধর্না দিচ্ছেন, কখনও ধর্মঘট বা কর্মবিরতি করছেন, গান-বিক্ষোভ চলছে। এতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীরা জনগণের কাজ করেন, তাঁদের তো কিছু দায়িত্ব রয়েছে।’’ মানস জানিয়েছেন, আগামী ৩ জুন হাজরা মোড়ে তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সমাবেশ ডাকা হয়েছে। ওই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের প্রতি ‘আস্থা’ জানানো হবে।