সাংবাদিক বৈঠকে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। — নিজস্ব চিত্র।
বামপন্থী আইনজীবীরা চাকরিতে বাধা দিলে এ বার আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ঘেরাও করা হবে। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিলেন উচ্চ প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বৃহস্পতিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাউন্সেলিংয়ে ডাক পাওয়া রাজু দাস নামে এক চাকরিপ্রার্থী। রাজ্যের বিরোধী দলগুলি তাঁদের চাকরি পাওয়ার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাজু। যদিও, এই ক্ষোভের কথা শুনে তা তৃণমূলের ‘অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন আইনজীবী তথা বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষা বিষয়ে নিয়োগ করা হবে ৭৫০ জনকে। তাতে কাউন্সেলিংয়ে ডাক পেয়েছেন ওই প্যানেলের ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু, মঙ্গলবার সেই ৭৫০ শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। এসএসসি-র কাছে রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বৃহস্পতিবার শুনানির সময় হাই কোর্ট মন্তব্য করে, রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের অবস্থান যদি এক না হয়, তবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে ভেঙে দেওয়া হোক।
এই আবহে গোটা বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ ওই তালিকার ওয়েটিং লিস্ট থেকে কাউন্সেলিংয়ে ডাক পাওয়া চাকরিপ্রার্থীরা। এ নিয়ে আদালত চত্বরেই রাজু হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘আমরা সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছি, এ বার সিপিএমের আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ঘেরাও করব। বামপন্থী যাঁরা আইনজীবী আছেন তাঁরা ভাল করে শুনে রাখুন আপনারা যে ভাবে আমাদের পাশে ছিলেন তেমন যদি না থাকেন, যদি বিরোধিতা করেন তা হলে তা হলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিপিএমের অস্তিত্ব শেষ করে দেব।’’ রাজুর ব্যাখ্যা, ‘‘মূলত, এই মামলাটি যিনি উত্থাপন করেছেন তিনি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। শূন্য পদ থাকলে প্যানেলভুক্তদের নিয়োগ করা নিয়ম। অনেক জায়গায় এমন হয়েছে। কিন্তু এখানে আমাদের বাধা দেওয়ার রাজনৈতিক চক্রান্ত করছে বিরোধীরা।’’
গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজুর অভিযোগ, বামনেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন এবং ফিরদৌস শামিম তাঁদের চাকরি পেতে বাধা দিচ্ছেন। রাজু জানিয়েছেন, তাঁদের আন্দোলনের মঞ্চে বাম এবং বিজেপি নেতা-নেত্রীদের অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন সেই সময়। এই কথার সূত্র ধরেই ক্ষোভের সুরে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে আমাদের আন্দোলনের মঞ্চে যাওয়াটা কি ওঁদের নাটক ছিল?’’ তাঁদের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাজু।
রাজুর অভিযোগ শুনে তা খারিজ করে দিয়েছেন বিকাশরঞ্জন। প্রবীণ ওই আইনজীবীর যুক্তি, ‘‘এটা তৃণমূলের সংগঠিত অপপ্রচার। আমরা চাইছি যোগ্যতার ভিত্তিতে স্বচ্ছ নিয়োগ হোক। সেখানে তো অযোগ্যদের বাদ দিতে হবে। শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও কেন অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হবে? এটাই তো নিয়মবিরুদ্ধ। আইনের প্রতি আস্থা রেখেই সবটা হচ্ছে।’’