মুকুলের ‘ঘর ওয়াপসি’ নিয়ে মিমের বন্যা নেটমাধ্যমে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গেরুয়া শিবিরে তিনটি বসন্ত কাটিয়ে ফের তৃণমূলে ফিরছেন মুকুল রায়। তাতে বঙ্গ বিজেপি-তে যেমন তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে, আত্মসমীক্ষার দাবি উঠছে, তেমনই তোলপাড় নেটমাধ্যমও। সপুত্র মুকুলের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে মিমে-মিমে ছয়লাপ ভার্চুয়াল দুনিয়া। তাতে কেউ কেউ অমিত শাহের ‘চাণক্য’ ভাবমূর্তিকে যেমন কটাক্ষ করেছেন, তেমনই ‘দলবদলু’ রাজনীতিকদের নীতি নিয়েও কটাক্ষ উড়ে এসেছে।
মুকুলের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জল্পনা জোরালো হচ্ছিল। বিশেষত, মুকুল-জায়াকে দেখতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ হাসপাতালে যাওয়ার পর। সেইসময় প্রকাশ্যেই অভিষেকের সেই সৌজন্যবোধের প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছিল মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়কে। তার পর থেকেই পদ্মশিবিরে মুকুল এবং শুভ্রাংশুকে নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
শুক্রবার সকালে আনন্দবাজার ডিজিটাল প্রথম জানিয়েছিল, সপুত্র মুকুল তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন শুক্রবারেই। দুপুরে মুকুল এবং শুভ্রাংশু তৃণমূল ভবনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পরই ছবি পরিষ্কার হয়ে যায়। আর তার পর থেকেই মিমের বন্যা বইতে শুরু হয় নেটমাধ্যমে। তাতে অভিষেকের সঙ্গে মুকুলের সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়েও কটাক্ষ করেন অনেকে। অভিষেকের ‘খবরদারি’ মেনে নিতে না পেরেই মুকুল তৃণমূল ছেড়েছিলেন বলে একসময় শোনা গিয়েছিল। সেই অভিষেকই যখন তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরাধিকারী হওয়ার পথে, সেইসময় মুকুলের ফেরার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছেন অনেকে। বলা হচ্ছে, ‘ভাইপোর জন্য তৃণমূল ছেড়েছিলেন। আর এখন ভাইপোর অধীনেই কাজ করতে ফিরলেন।’
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়ে ‘সোনার কেল্লা’ ছবির শেষ দৃশ্যে ছোট্ট মুকুলের ছবি এবং সংলাপ, ‘‘আমি বাড়ি যাব।’’ বস্তুত, এক দশক আগে ওই ছবির দৃশ্য অবলম্বনে মমতা, মুকুল এবং অধুনা বিজেপি দীনেশ ত্রিবেদীকে নিয়ে তৈরি একটি মিম শেয়ার করার অভিযোগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র গ্রেফতার হয়েছিলেন। মুকুলের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনে সামান্য রদবদল ঘটিয়ে ফিরে এসেছে সেই মিমও, যাতে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘মুকুল তুমি ফিরলে কেন?’ উত্তর এসেছে, ‘ওটা দুষ্টু লোক।’
তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে সর্বত্র। সংসদে দেওয়া তথ্যে নিখিল জৈনকে স্বামী বললে উল্লেখ করলেও নিখিলকে তিনি বিয়ে করেননি, তাঁর সঙ্গে ‘লিভ ইন’ করেছিলেন বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন নুসরত। সেই সূত্রে একটি মিম তৈরি হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, ‘মুকুলের বিজেপি-র সঙ্গে আইনত বিয়ে হয়নি। লিভ ইন করছিলেন।’ মুকুলের পর তৃণমূলের কোন কোন প্রাক্তন নেতা আবার তৃণমূলে ফিরতে পারেন, তা নিয়েও মিম তৈরি হয়েছে। যেখানে সব্যসাচী দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহদের দেখা গিয়েছে। যেখানে মুকুলের মুখে সংলাপ, ‘‘আমি কাটলাম।’’ আর রাজীব, সব্যসাচীরা নিজেদের ‘বেসুরো’ বলছেন।