জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল ছবি।
শুধু তাবড় সিন্ডিকেট চাঁই নয়, বিভিন্ন জেলার ছোট রেশন ডিলারদের কাছ থেকেও প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (বালু) জন্য নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘প্রণামী’ জমা পড়ত বলে ইডি-র তদন্তকারীদের দাবি। তাঁরা জানাচ্ছেন, রেশন কেলেঙ্কারির এমন বিভিন্ন উৎস মিলেছে।
ইডি সূত্রের দাবি, নানা সাঙ্কেতিক বা অসম্পূর্ণ নামে কম, বেশি অঙ্কে টাকা জমা পড়ত বালু ও তাঁর পারিবারিক সদস্যদের নামে থাকা সংস্থার পাঁচটি অ্যাকাউন্টে। কেউ নগদে, কেউ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মারফত টাকা জমা দিতেন। ২০১৫ থেকে ’২২ পর্যন্ত এই সংস্থার লেনদেনের ‘ব্যালেন্স শিট’ যাচাই করা হচ্ছে। এক তদন্তকারী অফিসারের দাবি, “কখনও ১০, ২০ বা ৫ লক্ষ টাকাও অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা হয়েছে।এ ভাবে প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকার কাছাকাছি জমা পড়েছে। যাঁরা জমা করেছেন, তাঁদের অনেকের পদবি বলা নেই। শুধু নাম রয়েছে।’’ ওই ‘রহস্যময় ব্যক্তির’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি চিহ্নিত করছে ইডি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে দাবি, জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ এক হিসাবরক্ষকের মধ্য কলকাতার অফিস থেকে বহু নথি উদ্ধার করা হয়। তা খতিয়ে দেখে নানা তথ্য উঠে আসছে।
জেল হেফাজতে থাকা বালু ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের দুই ভাইপো দেগঙ্গার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান (বিদেশ) ও আলিফ নুরকে (মুকুল) সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়। তারা এখন ইডি-হেফাজতে। বিদেশ ও মুকুল মারফত প্রায় ৪৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়, দাবি ইডির। এক তদন্তকারী অফিসারের দাবি, ‘‘এত দিন মূলত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কেন্দ্রের ন্যায্য মূল্যের রেশন সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করার তথ্য উঠে আসে। রাজ্যের ধান কেনার সহায়ক মূল্যও ভুয়ো নথি দেখিয়ে লোপাট হত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ছোট রেশন ডিলাররাও এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত যারা সরাসরি জ্যোতিপ্রিয়কে টাকা দিয়েছে।’’ তদন্তকারীদের দাবি, আপাতত কয়েক জন রেশন ডিলারকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। আরও ৬০-৭০ জন রেশন ডিলার রয়েছে বলে তাঁদের অনুমান। মূলত কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ন্যায্য মূল্যের রেশন সামগ্রী খোলাবাজারে বিক্রির মুনাফার একটি অংশ জ্যোতিপ্রিয়কে দেওয়া হয় বলে প্রাথমিক ভাবে দাবি তদন্তকারীদের।