ধর্মতলার ধর্না মঞ্চে।
বিগত ৭০ দিন ধরে এই শহিদ মিনারের নীচেই শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন এসএসসি আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার সেখান থেকে তাঁদের উৎখাত করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার আচমকাই ধর্না মঞ্চে এসে তাঁদের উঠে যেতে বলে পুলিশ। শুরু হয় ধ্বস্তাধ্বস্তি। আন্দোলনকারীদের অনেককে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে যেতেও দেখা যায় পুলিশ বাহিনীকে। ঘটনার আকস্মিকতায় দিশাহারা আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন, হঠাৎ এমন কী হল যে আন্দোলনস্থল থেকে উঠে যেতে বলা হচ্ছে তাঁদের?
শহিদ মিনারের নীচে ধর্নায় বসেছিলেন এসএসসির শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিভাগের চাকরিপ্রার্থীরা। সম্প্রতিই এই শিক্ষক নিয়োগের আন্দোলনকারীদের ১৬০০ পদে নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। তবে তার পরেও শহিদ মিনারে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি ছিল, শুধু আশ্বাস নয়, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করতে অবিলম্বে কাউন্সিলিং শুরু হোক। যার সাহায্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। আন্দোলনকারীদের সেই দাবি মানা হয়নি। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার তাঁদের বিক্ষোভস্থল থেকেও উঠিয়ে দেওয়া হল।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, আন্দোলনস্থলে আন্দোলনকারীদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মেনে আন্দোলন চালানোর অনুমতি দিয়েছিল কোর্ট। সেই সব শর্ত বা নির্দেশ মানেননি আন্দোলনকারীরা। তাই এই সিদ্ধান্ত।
কী কী নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে— তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ। প্রথমত, আন্দোলনস্থলে ৩০ জনের বেশি থাকার কথা নয়। কিন্তু আন্দোলনস্থলে প্রায়ই এর বেশি সংখ্যক আন্দোলনকারী উপস্থিত থেকেছেন। দ্বিতীয়ত, কোর্ট জানিয়েছিল, আন্দোলনস্থল ছেড়ে অন্যত্র যাওয়াও যাবে না। সেই নির্দেশও আন্দোলনকারীরা মানেননি। এর মধ্যেই বর্ষা এসে যাওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বেড়েছে। পুলিশের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে খোলা আকাশের নীচে আন্দোলনকারীদের থাকতে দেওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সব দিক মাথায় রেখেই আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে প্রথমে নোটিস দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের। পরে ডিসি (দক্ষিণ) এসে তাঁদের অনুরোধ করেন আন্দোলনস্থল ছেড়ে যেতে। তাতেও আন্দোলনকারীরা আন্দোলনস্থল ছেড়ে না যাওয়ায় পুলিশ এসে তুলে দেয় আন্দোলনকারীদের।
কিন্তু শহিদ মিনারের চাকরি প্রার্থীদের প্রশ্ন, এতদিন তো একই ভাবে আন্দোলন চালিয়ে এসেছেন তাঁরা। আচমকা এমন কী হল, যে তাঁদের এখন উঠে যেতে বলা হচ্ছে। এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের কথায়, যদি আন্দোলন উঠিয়ে দিতেই হয় তবে কাউন্সিলিং শুরু হোক। তা হলেই আন্দোলনস্থল ছেড়ে দেবেন তাঁরা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।