এপিসি ভবনের সামনে অবস্থানে ২০১৪ সালের টেট-উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। —নিজস্ব চিত্র।
চাকরির দাবিতে বিক্ষোভে অনড় টেট-উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। সোমবার সকালেই সল্টলেকের করুণাময়ী মোড় থেকে মিছিল করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কার্যালয় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র (এপিসি) ভবনের দিকে এগিয়ে যান তাঁরা। পুলিশ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাঁরা নড়েননি। এপিসি ভবনের সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে বসে পড়েন তাঁরা।
চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, তাঁরা প্রত্যেকেই ২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা ‘টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (টেট) পাস করেছেন। তার পর দু’বার ইন্টারভিউও দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। অপর দিকে আগামী বুধবার থেকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। বিক্ষোভ দেখানো চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে আগে তাঁদের নিয়োগপত্র দিতে হবে। ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। অবৈধ উপায়ে প্রাথমিকে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের অপসারিত করে মেধার ভিত্তিতে টেট-উত্তীর্ণ যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। পরে অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে চার জন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবিসংবলিত পত্র তাঁর হাতে তুলে দেন।
চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে এক জন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ২০২০ সালে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, প্রাথমিকে শিক্ষক পদে ২০ হাজার জনকে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু এক জনকেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি।” ওই চাকরিপ্রার্থীর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন প্রথমে ১৬, ৫০০ জনকে নিয়োগ করা হবে। তার পর ধাপে ধাপে বাকিদেরও নিয়োগ করা হবে। আমরা ওঁর কথার উপর ভরসা রেখেছিলাম। আমরা এখনও মুখ্যমন্ত্রীর কথার উপর ভরসা করতে চাই। তিনি অনুগ্রহ করে আমাদের নিয়োগের বিষয়টি দেখুন।” পর্ষদের নিয়োগ প্রক্রিয়াকেও মানেন না বলে জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। নতুন করে ইন্টারভিউ দিতে রাজি নন চাকরিপ্রার্থীদের কেউই। তাঁরা সরাসরি নিয়োগপত্র হাতে চান। সন্ধে গড়ানোর পরেও অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ায় অনড় চাকরিপ্রার্থীদের তরফে এক জন বলেন, “পুলিশ অবস্থান তুলতে এলেও আমরা এখান থেকে উঠব না। পুলিশের লাঠি খাব, কিন্তু চাকরি সংক্রান্ত কোনও নিশ্চয়তা না পেলে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”