Sisir Adhikari: তাঁর সাংসদপদ খারিজ করতে তৃণমূলের আবেদন, মুখ খুললেন অধিকারী শিশির

দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় শিশিরের সাংসদপদ খারিজের প্রশ্নে বৃহস্পতিবার লোকসভার স্পিকারকে ফোন করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২১ ১২:০৬
Share:

শিশির অধিকারী। ফাইল চিত্র।

তাঁর সাংসদপদ খারিজের জন্য লোকসভার স্পিকারের কাছে তৃণমূলের আবেদন নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। শুক্রবার তিনি আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, ‘‘আমি তো এমনিই সাংসদপদ ছেড়ে দিতাম। আমার শরীরের কারণে। আমি ক্যানসারের মুখ থেকে ফিরে এসেছি। এমনিতেও আমার বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ রয়েছে। নেত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বারণ করেছিলেন বলে করিনি। বিধানসভা ভোটের পরেও ভেবেছিলাম সাংসদের পদে ইস্তফা দিয়ে দেব। কারণ, একটা বিবেকের ব্যাপার আছে। নীতির ব্যাপার আছে। কিন্তু এখন যখন ওরা (তৃণমূল) অভিযোগ করেছে, তখন শুনানি হোক। দোষী প্রমাণিত হলে আমি চলে যাব।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় শিশিরের সাংসদপদ খারিজের প্রশ্নে বৃহস্পতিবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে ফোন করেছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে সুদীপ বলেন, ‘‘আমি ওঁকে (সিপকারকে) বিষয়টি (শিশিরের সাংসদপদ খারিজ) সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। উনি জানিয়েছেন, অনেক দিন সংসদ ভবনে যেতে পারেননি। সংসদ ভবনে গিয়ে নথিপত্র খতিয়ে দেখে জানাবেন।’’ সুদীপ আরও বলেন, ‘‘আমার ধারনা, স্পিকার ওঁকে এবং সুনীল মন্ডলকে ডেকে জানতে চাইবেন, তাঁরা কোন দলে রয়েছেন। তৃণমূল না বিজেপি? এটুকু তো উনি করতেই পারেন। করা উচিতও।’’

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত শিশির-সুনীলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজের দাবি জানিয়ে স্পিকারের কাছে আগেই দরবার করেছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ। গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল। বিধানসভা ভোটের প্রচারে ২১ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভায় হাজির হয়ে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেছিলেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির। সুনীলের সাংসদপদ খারিজের দাবিতে গত ৪ জানুয়ারি স্পিকারকে প্রথম চিঠি দেন সুদীপ। তার পর ২ মে ভোটপর্ব মিটে যেতে ১২ মে আবার সুনীলের সাংসদপদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকারকে দ্বিতীয় চিঠি দেন সুদীপ। পাশাপাশি, ১৭ মে স্পিকারকে চিঠি দেন শিশিরের সাংসদপদ খারিজের দাবিতে। কিন্তু ওই দুই বিষয়েই লোকসভার সচিবালয় বা স্পিকারের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি। তার ফলেই বৃহস্পতিবার সকালে স্পিকারকে ফোন করে শিশির-সুনীলকে অপসারণের দাবি জানান সুদীপ।

Advertisement

সুদীপের ওই উদ্যোগের পর সুনীল বৃহস্পতিবার সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিলেও শিশির কিছু বলেননি। তবে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘বাম আমলে ২৪-২৫ বছর বিরোধী আসনেই ছিলাম। ক্ষমতা এখন আছে। কখনও ক্ষমতা থাকবে না। তাতে আমার কিছু বলার নেই। বুঝতে পারছি, আমাদের পরিবারকে টার্গেট করে নেওয়া হয়েছে। স্পিকার যদি আমার বিরুদ্ধে তথ্য পান, তা হলে উনি যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন। তা আমি মেনেও নেব। অভিযোগ যখন করেছে ওরা, তখন শুনানি হোক। শুনানিতে আমি দোষী প্রমাণিত হলে নিজেই সবে যাব।’’ তবে একইসঙ্গে শিশিরের দাবি, বিধানসভা ভোটের অনেক আগে একবার তিনি ভেবেছিলেন সাংসদের পদ ছেড়ে দেবেন। কিন্তু নেত্রীই তাঁকে বারণ করেছিলেন। এমনকি, বিধানসভা ভোটের অব্যবহিত পরেও তিনি ভেবেছিলেন সাংসদের পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বিবেক এবং নীতিগত কারণে। কিন্তু এখন আর তা দিতে চান না। তাঁর কথায়, ‘‘আমি শুধু বলেছিলাম, ছেলে যেদিকে আছে, আমাক সেদিকে থাকতেই হবে। আমার ছেলেটা যদি অন্য দলে চলে যায়, আমি কি তাকে সমর্থন করব না! এটা ওরা সস্তার রাজনীতি করছে। আমি ৬২ বছর রাস্তায় দাঁড়িয়ে লড়াই করেছি। দরকার হলে আবার রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াব না হয়।’’

তিনি কি সাংসদপদ ছেড়ে দেবেন? শিশিরের আবার জবাব, ‘‘অভিযোগ করেছে যখন, শুনানি হোক। তাতে আমি দোষী প্রমাণিত হলে চলে যাব। ওদের অভিযোগ যদি স্পিকার মেনে নে, তা হলে তো আমাকে এমনিতেই চলে যেতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement