সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত। —ফাইল চিত্র।
সিঙ্গুরের সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত প্রয়াত। তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন সিঙ্গুরের তৎকালীন সিপিএম জ়োনাল কমিটির সম্পাদক। বৃহস্পতিবার সকালে সিঙ্গুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় অপূর্বপুরে নিজের বাড়িতে প্রয়াত হন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
তাপসী-মামলায় দু’মাস ১৯ দিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন সুহৃদ। তখন তাঁকে এক বার লাই ডিটেক্টরের সামনে বসানো হয়েছিল। জামিনে মুক্ত ছিলেন এই সিপিএম নেতা। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। সুহৃদের দাবি ছিল, তাঁর থেকে অনুমতি না নিয়েই লাই ডিটেক্টরের সামনে বসানোর সময়ে পায়ে-হাতে রাসায়নিক লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকেই তাঁর পায়ে দগদগে ঘা হয়ে যায় বলে দাবি ছিল তাঁর। সুহৃদের সঙ্গেই ওই মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন আর এক সিপিএম কর্মী দেবু মালিকও।
সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবব্রত ঘোষ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘সুহৃদ দত্ত ছিলেন রাজ্যের শিল্পস্থাপন আন্দোলনের অন্যতম নেতা। এক জন সৎ মানুষকে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল।’’ সিপিএম আরও জানিয়েছে, দলীয় মর্যাদা মেনেই সুহৃদকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। সুহৃদ ছিলেন অকৃতদার। দলের সর্ব ক্ষণের কর্মী ছিলেন তিনি।
২০০৬ সালের ডিসেম্বরে সিঙ্গুরের বেরাবেরি মৌজায় চাষের জমি থেকে তাপসীর অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনা কার্যত তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধীদের চাপের মুখে তাপসী হত্যার তদন্তভার সিবিআইকে দিতে এক প্রকার বাধ্য হয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তা নিয়েও হুগলি সিপিএম দলের মধ্যে বুদ্ধের তীব্র সমালোচনা করেছিল। সুহৃদের হয়ে মামলা লড়ার জন্য ‘সিঙ্গুর ষড়যন্ত্র মামলা’ নামে তহবিল সংগ্রহ করেছিল সিপিএম। আনন্দবাজার অনলাইনের থেকেই সুহৃদের মৃত্যুর খবর শোনেন তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিক। সুহৃদের প্রয়াণের খবর শুনে তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত মারা গেলেন। কিন্তু তদন্ত এখনও শেষ হল না।’’