—নিজস্ব চিত্র।
১০০ দিনের কাজ, আবাস প্রকল্পের ‘বকেয়া’ টাকা না দিয়ে বাংলাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে রাজ্য জুড়ে সরব হয়েছে শাসকদল তৃণমূল। এ বার সিকিম বিপর্যয়েও ‘বাংলা-বঞ্চনা’র অভিযোগ তুলল তারা। পড়শি রাজ্যে বন্যা বিপর্যয়ের আঁচ বাংলার পাহাড়েও পড়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যাবতীয় সাহায্য সিকিমকেই করছে। বাংলার সঙ্গে ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণ করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের বন্যা-বিপর্যস্ত কালিম্পং পরিদর্শনে গিয়ে এমনই অভিযোগ তুললেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘বাংলা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যালার্জি রয়েছে!’’ পাল্টা কটাক্ষ করেছেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শনিবার কালিম্পঙের বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখছেন অরূপ। সে কথা নিজেই জানিয়েছেন মন্ত্রী। দুপুরে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে তিনি সোজা চলে যান কালিম্পঙের তিস্তাবাজার সংলগ্ন এলাকায়। হড়পা বানে সেখানেই সব চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের রাখা হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। তাঁদের অবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন মন্ত্রী। খোঁজখবর নেন স্থানীয় প্রশাসনের থেকেও। অরূপের সঙ্গেই ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, প্রাক্তন সাংসদ শান্তা ছেত্রী, শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব এবং ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অরূপ বলেন, ‘‘সিকিমে বড় বিপর্যয় হয়েছে। আমাদের কালিম্পং জেলাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যেন কোনও ত্রুটি না থাকে।’’ মন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জিটিএ-কে রাজ্যের কোষাগার থেকে ২৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে কী ভাবে মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়। শনিবার অরূপের সঙ্গে ছিলেন জিটিএ চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপাও। মন্ত্রী জানান, জিটিএ-র সঙ্গে সমন্বয় রেখেই সব কাজ করা হচ্ছে।
এর পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান অরূপ। তিনি বলেন, ‘‘সিকিমকে কেন্দ্র সাহায্য করছে। আমাদের তাতে কোনও আপত্তি নেই। ভয়ঙ্কর অবস্থা সিকিমের। আমরা চাই, আরও বেশি করে ওদের সাহায্য করা হোক। কিন্তু কালিম্পংও ভারতের মধ্যে পড়ে। কেন কালিম্পংকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? এক টাকাও কালিম্পঙের জন্য বরাদ্দ করা হল না। সব সময়েই বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হয়। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা সব রাজ্য পাবে। শুধু বাংলা পাবে না। দুর্যোগ হলে ক্ষতিপূরণ পায় সব রাজ্য। বাংলা পায় না।’’
অরূপের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘ঘটনার চার দিন পর ছবি তোলার জন্য উনি মাঠে নেমেছেন। অন্য দিকে, ঘটনার দিন থেকেই সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীকে দেখুন। রাত দিন এক করে কাজ করছেন। অরূপ বিশ্বাসের কাছে আমি জানতে চাই, ২০২১ সালে যখন ভূমিধস হয়েছিল, ৪৭৫ কোটি টাকা কেন্দ্রের থেকে আমি এনেছিলাম। অরূপদা বলুন, দার্জিলিং, কালিম্পঙের লোকেরা কত টাকা পেয়েছেন? আমাদের প্রশ্ন করার আগে নিজেদের প্রশ্ন করুন। দার্জিলিং ও কালিম্পঙের মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যা করা দরকার, সেটা করবে। কেন্দ্রের ফান্ডের জন্য রিপোর্ট পাঠাতে হয়। যেটা সিকিম প্রথম দিন থেকেই করছে। আমি চিঠি লিখেছি কেন্দ্রের কাছে। অবশ্যই টাকা বরাদ্দ হবে।’’